নির্বাচন পেছানোর সন্দেহে রাজনৈতিক উত্তাপ: বিএনপি, জামায়াত ও এনসিপির ভিন্ন ভিন্ন অবস্থান

দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে আবারও উত্তেজনা তৈরি হয়েছে আসন্ন নির্বাচনের সময়সূচি নিয়ে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার জানিয়েছে, আগামী ডিসেম্বর থেকে জুনের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। তবে এই সময়সীমা নিয়ে ভিন্ন ভিন্ন অবস্থান নিয়েছে বিএনপি (BNP), জামায়াতে ইসলামী (Jamaat-e-Islami) এবং এনসিপি (NCP)।

❖ বিএনপির দাবি: নির্বাচন পেছানো মানা

বিএনপি স্পষ্টভাবে জানিয়েছে, তারা ডিসেম্বরের মধ্যেই নির্বাচন চায়। দলটির শীর্ষ নেতারা বলছেন, এখনই একটি স্পষ্ট রোডম্যাপ প্রকাশ করা দরকার। তাদের মতে, নির্বাচন পেছানোর মতো কোনো যৌক্তিক কারণ নেই। তারা প্রশ্ন তুলেছে, “সংস্কার বলতে সরকার কী বোঝাচ্ছে?”

বিএনপির দাবি, যদি সংবিধান সংশোধনের মতো বড় কোনো সংস্কার বাদ দেওয়া হয়, তাহলে অন্যান্য সংস্কার ১-২ মাসেই করা সম্ভব। এ থেকে তারা মনে করছে, কিছু রাজনৈতিক দল এবং সরকারের আচরণে “নির্বাচন বিলম্বিত করার ষড়যন্ত্র” স্পষ্ট হচ্ছে। তাই তারা ঘোষণা দিয়েছে, যদি ডিসেম্বরের বাইরে নির্বাচন হয়, তবে তারা রাজপথে আন্দোলনে নামবে

❖ জামায়াত ও এনসিপির অবস্থান: সময় দেওয়ার পক্ষে

অন্যদিকে জামায়াতে ইসলামী এবং এনসিপি বলছে, সরকারকে ডিসেম্বর থেকে জুন পর্যন্ত সময় দেওয়া উচিত, যাতে সে সময়ের মধ্যে সংস্কার প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে নির্বাচন আয়োজন সম্ভব হয়।

জামায়াতের মুখপাত্র বলেন, “প্রধান উপদেষ্টা বলেই দিয়েছেন, জুনে নির্বাচন হবে—আমরা সেই অনুযায়ী প্রস্তুতি নিচ্ছি।”

এনসিপিও মনে করে, গণআন্দোলনের পরে কিছু প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার স্বাভাবিক এবং সেজন্য সরকারকে প্রয়োজনীয় সময় দেওয়া উচিত। তবে তারা স্পষ্ট করেছে, এখনো আন্দোলনের উপযোগী পরিস্থিতি তৈরি হয়নি

❖ মূল বিরোধের চিত্র

  • বিএনপি: ডিসেম্বরের মধ্যেই নির্বাচন চাইছে
  • সরকার: সংস্কার শেষ করে জুনে নির্বাচন করতে চায়
  • জামায়াতে ইসলামীএনসিপি: সরকারকে জুন পর্যন্ত সময় দেওয়ার পক্ষে
  • বিএনপির অভিযোগ: নতুন ও পুরনো দলগুলো সরকারের সময় চেয়ে নির্বাচন বিলম্বিত করার সহায়তা করছে।

❖ সামনে কী ঘটতে পারে?

বিএনপি আগামী ১৬ এপ্রিল প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকে বসবে, যেখানে তারা ডিসেম্বরে নির্বাচন অনুষ্ঠানের রোডম্যাপ দাবি করবে।

তাদের দাবি পূরণ না হলে, আন্দোলনে নামার হুমকি দিয়েছে দলটি।

অন্যদিকে, সরকার রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে বৈঠকের মাধ্যমে ঐকমত্য গড়ার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু বড় দলগুলোর অবস্থান ভিন্ন হওয়ায় ঐক্যমতে পৌঁছানো কঠিন হয়ে পড়েছে।