আদাবরে গোপন অভিযান, ধরা পড়ল কাহালুর আলোচিত দুই নেতা
রাজধানীর আদাবর থানা (Adabor Thana) এলাকায় আত্মগোপনে থাকা বগুড়ার কাহালু উপজেলা (Kahaloo Upazila) এর দুই আলোচিত আওয়ামী লীগ (Awami League) নেতা—পিতা মোঃ হেলাল উদ্দিন কবিরাজ (Md. Helal Uddin Kobiraj) (৬০) ও পুত্র মোঃ সুরুজ উদ্দিন কবিরাজ (Md. Suruj Uddin Kobiraj) (৪০)—কে গ্রেফতার করেছে বগুড়া জেলা পুলিশ (Bogra District Police) এর গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি)।
রাজনৈতিক পরিচয়ে দমন-পীড়নের অভিযোগ
গ্রেফতারকৃত হেলাল উদ্দিন কাহালু উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এবং কাহালু পৌরসভার দুইবারের সাবেক মেয়র। তার ছেলে সুরুজ উদ্দিন কবিরাজ কাহালু উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি এবং দুই মেয়াদে উপজেলা চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ২০২৪ সালের জুলাই মাসে সারা দেশে যখন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলন শুরু হয়, তখন বগুড়াতেও সে আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে। অভিযোগ রয়েছে, এই পিতা-পুত্র আন্দোলনকারীদের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে হামলার নির্দেশ দেন এবং রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে দমন-পীড়ন চালান। তারা এই আন্দোলনকে ‘সরকারবিরোধী ষড়যন্ত্র’ বলে দাবি করে বিভিন্ন এলাকায় ছাত্রদের ওপর হামলার নির্দেশ দেন।
সহিংস ঘটনার নেপথ্যে নেতৃত্বের অভিযোগ
স্থানীয় প্রশাসন ও তদন্তকারী সংস্থার তথ্যমতে, কাহালু ও আশেপাশের এলাকায় সংঘটিত একাধিক সহিংস ঘটনার নেপথ্যে সরাসরি নেতৃত্ব দিয়েছেন হেলাল ও সুরুজ।
হেলাল উদ্দিন কবিরাজের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রবিরোধী কার্যকলাপ, সরকারি কাজে বাধা এবং আন্দোলনকারীদের ওপর হামলার অভিযোগে ৫টি মামলা রয়েছে। অন্যদিকে, সুরুজ উদ্দিন কবিরাজের বিরুদ্ধে রয়েছে দাঙ্গা, ভাঙচুর এবং প্রশাসনকে ভয়ভীতি প্রদর্শনের অভিযোগে ৪টি মামলা।
ঢাকায় আত্মগোপন, গোপন তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান
২০২৪ সালের ৫ আগস্টের পর তারা এলাকা ছেড়ে আত্মগোপনে চলে যান। এরপর দীর্ঘদিন ঢাকায় আত্মগোপনে ছিলেন। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বৃহস্পতিবার রাতে ডিবির একটি বিশেষ দল রাজধানীর আদাবর থানা এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করে।
পুলিশের মন্তব্য
বগুড়া জেলা পুলিশ এর এক শীর্ষ কর্মকর্তা জানান, “এই পিতা-পুত্র দীর্ঘদিন ধরে রাজনৈতিক পরিচয়ের আড়ালে জনগণের অধিকার ও গণতান্ত্রিক আন্দোলনকে রক্তাক্ত করতে চেয়েছিল। তাদের গ্রেফতারের মাধ্যমে সাধারণ মানুষ কিছুটা স্বস্তি পাবে বলে আমরা বিশ্বাস করি।”
আদালতে তোলার প্রস্তুতি
গ্রেফতারকৃতদের বগুড়া (Bogra) তে স্থানান্তরের প্রক্রিয়া চলছে এবং শিগগিরই তাদের আদালতে হাজির করা হবে। তদন্তের স্বার্থে কিছু তথ্য আপাতত গোপন রাখা হয়েছে।