প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বর্তমানে শতাধিক মামলা ও আন্তর্জাতিক চাপের মুখে বিচারের সম্মুখীন। সরকার পতনের পর তিনি ভারতের রাজনৈতিক আশ্রয়ে রয়েছেন। যদিও অতীতেও (১৯৭৫ সালে) তাকে ভারত আশ্রয় দিয়েছিল, এবার পরিস্থিতি ভিন্ন। আগস্টের প্রথম সপ্তাহে দীর্ঘ দরকষাকষির পর, ভারত সরকারের সহায়তায় তিনি দেশ ত্যাগ করেন।
আশ্রয়, দরকষাকষি ও সেনা ভূমিকা
৪ ও ৫ আগস্টের দরকষাকষিতে অজিত দোভাল-এর সঙ্গে তার কয়েকদফা ফোনালাপ হয়। শেখ হাসিনা জানান, সেনাবাহিনী তার পাশে নেই এবং যে কোনো সময় গণভবন ঘেরাও হতে পারে। এরপর সেনা নেতৃত্বের সঙ্গে আলোচনায় সিদ্ধান্ত হয় তাকে নিরাপদে চলে যেতে দেওয়া হবে।
দলের অবস্থা ও আত্মগোপনে সহকর্মীরা
সরকার পতনের পর ৩২ নম্বর-এর প্রাসাদ তছনছ হয়ে গেছে। দলের অস্তিত্ব নেই বললেই চলে, কেউ প্রকাশ্যে কথা বলছে না। আত্মগোপনে থাকা নেতাকর্মীদের মাঝে হতাশা বিরাজ করছে। কেউ কেউ দলীয় পরিচয় গোপন করে নতুন রাজনৈতিক পরিচয়ে আবির্ভূত হচ্ছেন।
আন্তর্জাতিক অবস্থান ও ইউনূস-মোদি বৈঠক
মোদি এবং মুহাম্মদ ইউনূসের মধ্যে এক বৈঠকে শেখ হাসিনার প্রত্যর্পণ ইস্যু উত্থাপিত হলেও, কোনো অগ্রগতি হয়নি। বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে একাধিকবার তাকে ফেরত চেয়ে কূটনৈতিক চিঠি পাঠানো হয়েছে।
নির্বাচন নিয়ে জটিলতা ও আওয়ামী লীগের ভবিষ্যৎ
বর্তমানে নির্বাচন কমিশন সীমানা পুনঃনির্ধারণ ফাইল পাঠালেও ইউনূস প্রশাসন এখনো নির্বাচন নিয়ে সুনির্দিষ্ট সিদ্ধান্ত দেয়নি। আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ না হলেও, দলটির রেজিস্ট্রেশন বাতিলের সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা চলছে। এতে করে নির্বাচন কমিশনের কাজও পিছিয়ে পড়ছে।
শেখ হাসিনার রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ
একাধিক মামলা, আন্তর্জাতিক চাপ, দলের শূন্যতা, এবং সেনা প্রশাসনের প্রত্যাখ্যান—সব মিলিয়ে শেখ হাসিনার রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ এখন চরম অনিশ্চয়তায়। সূত্র জানায়, তিনি নেতৃত্ব কাউকে ছেড়ে দিতে রাজি নন, এমনকি নিজের পরিবারকেও নয়। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, ব্যক্তিগতভাবে নয়, দল হিসেবেও আওয়ামী লীগ এখন চরম চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি।