অনলাইন জুয়া বন্ধে ব্যবস্থা নিতে সাকিবসহ সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে আইনি নোটিশ

অনলাইন জুয়ার বিস্তার রোধে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সরকারকে আইনি নোটিশ পাঠিয়েছেন সুপ্রিমকোর্ট (Supreme Court)–এর আইনজীবী ব্যারিস্টার মোহাম্মদ হুমায়ন কবির পল্লব (Barrister Mohammad Humayun Kabir Pallab)।

মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) ল অ্যান্ড লাইফ ফাউন্ডেশন ট্রাস্ট (Law and Life Foundation Trust) এর পক্ষে জনস্বার্থে এ নোটিশ পাঠানো হয় ডাক ও টেলিযোগাযোগ সচিব, তথ্য ও সম্প্রচার সচিব, স্বরাষ্ট্র সচিব, আইন সচিব, বিটিআরসি (BTRC), বাংলাদেশ ব্যাংক (Bangladesh Bank) এর ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট এবং আইজিপি (IGP)–এর কাছে।

জুয়া বিস্তারের অভিযোগ ও উদ্বেগ

নোটিশে বলা হয়েছে, দেশের প্রচলিত আইন অনুযায়ী জুয়া বেআইনি হলেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিষ্ক্রিয়তার কারণে অনলাইন জুয়া এখন মহামারি আকারে ছড়িয়ে পড়েছে। প্রায় ৫০ লাখ মানুষ এ জুয়ায় আসক্ত হয়ে পড়েছে, যার মধ্যে রয়েছে শিশুরাও। এই সুযোগে বিদেশি চক্র ও দেশীয় সিন্ডিকেট মোবাইল ব্যাংকিং এবং তফসিলি ব্যাংকের মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা পাচার করছে।

সেলিব্রেটিদের নাম উল্লেখ

প্রথম আলোর (Prothom Alo) প্রতিবেদনের বরাতে নোটিশে উল্লেখ করা হয়, অনলাইন জুয়ার বিজ্ঞাপন প্রচারে সেলিব্রেটিদের সংশ্লিষ্টতা রয়েছে। এর মধ্যে আছেন জাতীয় ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান (Shakib Al Hasan), মডেল পিয়া জান্নাতুল (Peya Jannatul), শবনম বুবলি (Shobnom Bubly), সামিরা খান মাহি (Samira Khan Mahi), নুসরাত ফারিয়া (Nusraat Faria), মাহিয়া মাহি (Mahiya Mahi) ও অপু বিশ্বাস (Apu Biswas)।

আইনি কাঠামো ও সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা

নোটিশে উল্লেখ করা হয়, ১৮৬৭ সালের ব্রিটিশ আমলে প্রণীত জুয়া আইন, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ অর্ডিন্যান্স ১৯৭৬-এর ৯২ ধারা, দণ্ডবিধির ২৯৪-এ ও ২৯৪-বি ধারা এবং সংবিধানের অনুচ্ছেদ ১৮(২) অনুযায়ী জুয়া বেআইনি এবং রাষ্ট্রকে তা প্রতিরোধে পদক্ষেপ নিতে হবে।

২০০১ সালের টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ আইন–এর ২৯ ও ৩০ ধারায় নিরাপদ ইন্টারনেট নিশ্চিত করার বাধ্যবাধকতা থাকলেও কার্যকর ব্যবস্থা না নেওয়ায় ক্ষতিকর কনটেন্টে প্ল্যাটফর্মগুলো ভরে গেছে।

৫ দফা দাবি

নোটিশে নিচের ৫টি বিষয়ে অবিলম্বে পদক্ষেপ নিতে বলা হয়েছে:

  1. সব অনলাইন জুয়া সাইট, অ্যাপ, লিংক, গেটওয়ে বন্ধ করা।
  2. গুগলসহ আন্তর্জাতিক ইন্টারনেট কোম্পানিগুলোকে অনলাইন জুয়ার বিজ্ঞাপন প্রচার বন্ধে বাধ্য করা।
  3. সেলিব্রেটি, মোবাইল ব্যাংকিং ও তফসিলি ব্যাংকগুলোর বিরুদ্ধে তদন্ত করে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ।
  4. সামাজিক মাধ্যমে অনলাইন জুয়া সম্পর্কিত অ্যাক্সেস বন্ধ করা।
  5. অনলাইন জুয়া প্রতিরোধে একটি স্পেশাল মনিটরিং সেল গঠন।

নোটিশে আরও বলা হয়েছে, উল্লেখিত দাবিগুলো পূরণ না হলে ল এন্ড লাইফ ফাউন্ডেশন জনস্বার্থে হাইকোর্ট (High Court)ে রিট দায়ের করবে।