সোনারগাঁ উপজেলার মৎস্য কর্মকর্তা মাহমুদা আক্তার-এর কার্যালয়ের পিয়ন মাহবুব আলম সুমন-এর বিরুদ্ধে প্রতারণার মাধ্যমে কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। তিনি ড. মুহাম্মদ ইউনূস এর নাম ভাঙিয়ে স্থানীয় বাসিন্দাদের কাছ থেকে এই অর্থ হাতিয়ে নিয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
প্রতারণার কৌশল
ভুক্তভোগীরা জানান, সনমান্দি ইউনিয়নের শতাধিক দরিদ্র মানুষের কাছে মাহবুব দাবি করেন যে, অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস প্রত্যেক অসহায় নাগরিককে নগদ দুই লাখ টাকা অনুদান দেবেন। এই অর্থ পেতে হলে আগাম ৬ হাজার টাকা ব্যাংকে জমা দিতে হবে। টাকা জমার পর মুঠোফোনে পাঠানো হতো একটি এসএমএস, যাতে লেখা থাকতো— “আপনার অ্যাকাউন্টে ৫ হাজার টাকা জমা হয়েছে।”
তবে পরে ভুক্তভোগীরা খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন, এসএমএসটি ছিল সম্পূর্ণ ভুয়া এবং কোনো ব্যাংকে তাদের নামে কোনো অ্যাকাউন্ট খোলা হয়নি।
আরও প্রতারণার ধরন
তথ্যসূত্রে জানা গেছে, শুধুমাত্র অনুদানের নামেই নয়, মাহবুব আলম সুমন আরও বিভিন্ন প্রতিশ্রুতির মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ অর্থ আদায় করেছেন:
– সরকারি ঘর পাইয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতিতে জনপ্রতি ১.৫ লাখ টাকা
– দুধ দেওয়া গাভি দেওয়ার নামে জনপ্রতি ৫০ হাজার টাকা
– মাতৃত্বকালীন ভাতা, বিধবা ভাতা, বয়স্ক ভাতা ও খাদ্য সহায়তার নামেও টাকা আদায়
প্রশাসনের পদক্ষেপ
এ ঘটনায় বুধবার (১৬ এপ্রিল) ভুক্তভোগীরা সোনারগাঁ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফারজানা রহমান-এর বরাবর লিখিত অভিযোগ দেন।
মৎস্য কর্মকর্তা মাহমুদা আক্তার বলেন, “আমরাও অভিযোগ পেয়েছি এবং তদন্ত শুরু করেছি। তাকে শোকজ করা হয়েছে। তদন্তে দোষী প্রমাণিত হলে তাকে বিচারের আওতায় আনা হবে।”
ইউএনও ফারজানা রহমান বলেন, “আমার কাছে অভিযোগ এসেছে। তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”
প্রতারণার প্রভাব
স্থানীয়দের ভাষ্য অনুযায়ী, মাহবুবের এ প্রতারণায় অনেক দরিদ্র পরিবার সর্বস্ব হারিয়েছে। অনেকে নিজের সঞ্চয় এমনকি ধার করে অর্থ দিয়েছিলেন বিভিন্ন ‘ভাতা’ কিংবা ‘অনুদান’ পাওয়ার আশায়। বর্তমানে এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ও ক্ষোভ বিরাজ করছে।