ইউনূস সরকারের মেয়াদ দীর্ঘায়িত হবে? বিশ্লেষকদের মতামত বিশ্লেষণে

নোবেলজয়ী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস-এর নেতৃত্বে গঠিত অন্তর্বর্তী সরকারের ক্ষমতায় থাকার সম্ভাব্য সময়কাল নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গন ও সামাজিক মাধ্যমে জোর আলোচনা চলছে। গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর গঠিত ইউনূস সরকার এখনো জাতীয় নির্বাচনের নির্দিষ্ট রোডম্যাপ প্রকাশ করেনি, যা নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছে বিএনপি

পাঁচ বছরের ক্ষমতা: অনুমান না বাস্তবতা?

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী ও মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার-এর বক্তব্যকে ঘিরে পাঁচ বছরের জন্য অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতায় থাকতে চায় কি না, সে প্রশ্ন উঠেছে।

নির্বাচন বিলম্ব ও আইনি জটিলতা

আইন বিশেষজ্ঞ শাহদীন মালিক মনে করেন, অনির্বাচিত সরকার দীর্ঘ সময় ক্ষমতায় থাকলে তা সাংবিধানিক ও আন্তর্জাতিক স্বীকৃতির প্রশ্ন তুলবে। অতীতে ৫ম ও ৭ম সংশোধনী বাতিলের রায়ের দৃষ্টান্ত দেখিয়ে তিনি বলেন, আদালতের মতামত মানা বাধ্যতামূলক নয়, রায় মানতে হয়।

বিএনপির অবস্থান

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর-এর নেতৃত্বে সম্প্রতি প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক করে বিএনপি জানিয়ে দেয়, ডিসেম্বরের মধ্যেই নির্বাচন না হলে তারা পরিস্থিতিকে আরও সংকটজনক বলে মনে করে।

সরকারপক্ষের অবস্থান

আসিফ নজরুল বলেন, “নির্বাচন কোনোভাবেই জুনের পরে যাবে না, এটি জাতির প্রতি প্রধান উপদেষ্টার অঙ্গীকার।”

অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলোর অবস্থান

  • জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, তারা রমজানের আগেই নির্বাচন চান।
  • এনসিপি-র সদস্য সচিব আখতার হোসেন বলেন, মৌলিক সংস্কার এবং জুলাইয়ের গণহত্যার বিচার ছাড়া নির্বাচন নয়।

বিশ্লেষকদের দৃষ্টিভঙ্গি

মাহবুব উল্লাহ মনে করেন, নির্বাচন বিলম্ব হলে সরকার আন্তর্জাতিক ও অভ্যন্তরীণভাবে বৈধতা হারাবে। রাজনৈতিক বিশ্লেষক মহিউদ্দিন আহমদ বলেন, বিএনপির নেতাকর্মীদের আচরণ ও দলীয় শৃঙ্খলার অভাব সাধারণ মানুষের মধ্যে বিভ্রান্তি তৈরি করেছে।

উপসংহার

নির্বাচনের সময় নির্ধারণ ও রোডম্যাপ না থাকায় সরকারের দীর্ঘমেয়াদি ক্ষমতা নিয়ে সন্দেহ বৃদ্ধি পেয়েছে। এ প্রেক্ষাপটে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান দায়িত্ব দ্রুত নির্বাচন আয়োজন করে জনগণের ভোটাধিকার নিশ্চিত করা—এমনটাই মনে করছেন বিশ্লেষকরা।