চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড উপজেলার ভাটিয়ারী-এর হাজী তোবারক আলী চৌধুরী (টিএসি) উচ্চবিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক কান্তি লাল আচার্য-কে জোর করে পদত্যাগ করানোর ঘটনায় ব্যাপক ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে। অভিযোগ উঠেছে, স্থানীয় বিএনপি (BNP) ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা বুধবার (১৭ এপ্রিল) বিদ্যালয়ে মিছিল নিয়ে গিয়ে তাকে পদত্যাগে বাধ্য করে।
শিক্ষকের মেয়ের আবেগঘন স্ট্যাটাস
এই ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে একটি হৃদয়বিদারক স্ট্যাটাস দেন শিক্ষকের মেয়ে ভাবনা আচার্য। তিনি লিখেছেন, “কী সুন্দর তাই না! আমার বাবা কত মানুষকে টাকা ছাড়া পড়িয়েছেন। আজ একজন শিক্ষকের এই পরিণতি!”
ভাবনা জানান, তার বাবাকে কোনো প্রমাণ ছাড়া বলপূর্বক বিদ্যালয়ে অপদস্থ করা হয়েছে এবং ককটেল ফাটানোর ভেতর দিয়েই জোর করে পদত্যাগ করানো হয়। এমনকি তার বাবাকে মারধরের চেষ্টা করা হয় বলেও দাবি করেন তিনি।
স্কুল কর্তৃপক্ষ ও প্রত্যক্ষদর্শীদের বক্তব্য
বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের অনেকে জানান, মহিউদ্দিন আহমেদ নামের জামায়াত-সমর্থিত অ্যাডহক কমিটির সভাপতির পদ নিয়ে শিক্ষক ও স্থানীয় বিএনপি নেতাকর্মীদের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছিল। প্রধান শিক্ষককে পদত্যাগ করাতে গিয়ে তিনিও জিম্মিকৃত হন এবং তার আত্মীয়কে আহত করার অভিযোগ রয়েছে।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বলেন, “২০২৮ সাল পর্যন্ত আমার চাকরির মেয়াদ রয়েছে। কমিটি চাইলে নিয়ম অনুযায়ী মিটিং করে আমাকে সরাতে পারতো। কিন্তু যে অপমান করা হয়েছে, তা আমার বহু ছাত্রের সামনে।”
অভিযুক্তদের বক্তব্য
ভাটিয়ারী ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক খোরশেদ আলম বলেন, “প্রধান শিক্ষক নানা অনিয়মে জড়িত ছিলেন। আমরা তার পদত্যাগ দাবি করেছি, তিনি বাধ্য হয়ে পদত্যাগ করেছেন।”
সামাজিক প্রতিক্রিয়া ও শিক্ষকদের নিরাপত্তা
এই ঘটনাটি দেশব্যাপী শিক্ষকদের নিরাপত্তা ও মর্যাদা নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন তুলেছে। শিক্ষার্থীদের অভিভাবক, শিক্ষক সমাজ এবং নাগরিক সমাজ এই ধরনের ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে।