নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশন (Women’s Reform Commission) জাতীয় সংসদে আসন সংখ্যা ৬০০-তে উন্নীত করার সুপারিশ করেছে। এতে প্রতিটি নির্বাচনি এলাকায় একটি সাধারণ আসন এবং নারীদের জন্য একটি সংরক্ষিত আসনের প্রস্তাব রয়েছে—উভয় আসনে সরাসরি ভোটের মাধ্যমে নির্বাচন হবে।
শনিবার (১৯ এপ্রিল) বিকেল সাড়ে ৫টায় রাজধানীর বেইলি রোড (Bailey Road)–এ অবস্থিত ফরেন সার্ভিস অ্যাকাডেমিতে অনুষ্ঠিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এই তথ্য জানান কমিশনের প্রধান শিরীন পারভীন হক (Shireen Parveen Huq)।
প্রেস ব্রিফিংয়ে জানানো হয়, সুপারিশটি অন্তর্বর্তী সরকারের সময় বাস্তবায়ন সম্ভব। কমিশনের সদস্যরা প্রথমে এ প্রতিবেদন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস (Prof. Dr. Muhammad Yunus)–এর কাছে হস্তান্তর করেন।
জিপার পদ্ধতিতে মনোনয়নের প্রস্তাব
যদি সংসদে উচ্চকক্ষ গঠনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, সেক্ষেত্রে ৫০ শতাংশ আসনে দলীয়ভাবে নারী-পুরুষকে ‘জিপার পদ্ধতি’তে মনোনয়ন দেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে। বাকি ৫০ শতাংশ নির্দলীয় আসনে ৫টি নারী আন্দোলন থেকে প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করার পরামর্শও রয়েছে।
স্থানীয় সরকার ও রাজনীতিতে নারীর অংশগ্রহণ
প্রতিটি ওয়ার্ডে একটি সাধারণ এবং একটি নারী আসন রাখার সুপারিশ করা হয়েছে, যা পরবর্তী তিনটি স্থানীয় সরকার নির্বাচনে অস্থায়ীভাবে কার্যকর থাকবে। রাজনীতিতে নারীর অংশগ্রহণ বাড়াতে আরপিও (RPO)–তে নারীর অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার বিধান বাধ্যতামূলক করার প্রস্তাবও দেওয়া হয়েছে।
সুপারিশের বিষয়সমূহ
কমিশনের প্রতিবেদনে নারী অধিকার ও অগ্রগতির জন্য মোট ১৪টি খাতে সুপারিশ দেওয়া হয়েছে:
– সংবিধান ও নারীর অধিকার
– বিকেন্দ্রীকরণ ও স্থানীয় পর্যায়ের উন্নয়ন
– সহিংসতামুক্ত সমাজ
– জন প্রশাসনে নারীর অংশগ্রহণ
– শিক্ষা, প্রযুক্তি ও দক্ষতা
– সুস্বাস্থ্য, অর্থনীতি ও সম্পদের অধিকার
– শ্রম ও কর্মসংস্থান, নিরাপদ অভিবাসন
– টেকসই সামাজিক সুরক্ষা
– গণমাধ্যম, ক্রীড়া ও সংস্কৃতিতে অংশগ্রহণ
– জলবায়ু পরিবর্তন ও দুর্যোগে নারীর অন্তর্ভুক্তি
এই ব্যাপক সুপারিশ বাস্তবায়নের মাধ্যমে নারীর রাজনৈতিক, সামাজিক ও অর্থনৈতিক ক্ষমতায়নের নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হতে পারে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।