[“আমার বাবার ফাঁসি কার্যকর করুন”—বিডিআর সদস্যের ছেলের হৃদয়বিদারক আবেদন]

২০০৯ সালের বিডিআর বিদ্রোহ (BDR Mutiny)–এর ঘটনায় দণ্ডপ্রাপ্ত এক বিডিআর সদস্যের ছেলে ও প্রবাসী সাংবাদিক ইলিয়াস হোসেন (Elias Hossain) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি আবেগঘন পোস্ট দিয়ে তার বাবার ফাঁসি দ্রুত কার্যকর করার দাবি জানিয়েছেন।

শনিবার (১৯ এপ্রিল) নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে দেওয়া এক পোস্টে ইলিয়াস লিখেছেন, “অতি দ্রুত আমার বাবার ফাঁসি কার্যকর করার দাবি জানাচ্ছি।” তিনি উল্লেখ করেন, তার বাবা শফিকুল সোহেল (Shafiqul Sohel) ছিলেন একজন নিষ্ঠাবান বিডিআর সদস্য, যিনি ২৪ বছরের চাকরি শেষে অবসরের অপেক্ষায় ছিলেন।

“ফাঁসির রায় হলেও ১৫ বছর ধরে বন্দি”

পোস্টে ইলিয়াস দাবি করেন, তার বাবার বিরুদ্ধে কোনো ভিডিও প্রমাণ, প্রত্যক্ষদর্শী সাক্ষ্য বা অস্ত্র বহনের প্রমাণ নেই। শুধুমাত্র মিথ্যা সাক্ষ্য না দেওয়ার কারণে তার বাবাকে অপরাধী সাব্যস্ত করে সর্বোচ্চ শাস্তি প্রদান করা হয়েছে।

“একজন নিরপরাধ মানুষ বছরের পর বছর কারাগারে মানবেতর জীবন কাটাচ্ছে, এটা সহ্য করা যায় না”—এমন কথা উল্লেখ করে ইলিয়াস বলেন, “আমার মা ও দুই ছোট ভাইয়ের মানসিক যন্ত্রণা আর দেখা যাচ্ছে না। তাই বলছি, ফাঁসি কার্যকর করুন না হয় মুক্তি দিন।”

রাষ্ট্রের ন্যায়বিচারের প্রতি ক্ষোভ

ইলিয়াস হোসেন তার পোস্টে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ও বিচার ব্যবস্থার ওপর তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, “এই সরকার নিরপরাধ জেলবন্দিদের ব্যাপারে নিরুত্তর, বরং তারা নতুন করে মিথ্যা আসামি তৈরি করতে ব্যস্ত।”

তিনি আরও বলেন, “ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা না হলে অন্তত ফাঁসি কার্যকর করে আমাদের পরিবারকে মুক্তি দিন।” তার দাবি, যেসব মিথ্যা সাক্ষী ও আসল পরিকল্পনাকারীরা এখনও বহাল তবিয়তে আছে, তাদের বিচার না হওয়ায় একজন নিরপরাধ মানুষকে দীর্ঘদিন কষ্ট ভোগ করতে হচ্ছে।

সমাজে আলোড়ন সৃষ্টি

ইলিয়াস হোসেনের এই পোস্ট সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। অনেকে তার আবেগঘন বার্তার প্রতি সহানুভূতি প্রকাশ করেছেন, আবার কেউ কেউ বিচারিক প্রক্রিয়ার নিরপেক্ষতা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন।

এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ২০০৯ সালের বিডিআর বিদ্রোহে দণ্ডপ্রাপ্ত ও অভিযুক্তদের বিচার নিয়ে নতুন করে আলোচনা শুরু হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।