লিবিয়ায় মাফিয়াদের হাতে শিবচরের অর্ধশত যুবক জিম্মি, নিখোঁজ বহু

মাদারীপুর (Madaripur) জেলার শিবচর (Shibchar) উপজেলার অন্তত অর্ধশত যুবক ইউরোপে পাড়ি জমানোর আশায় দালালদের মাধ্যমে লিবিয়া গিয়ে সেখানে মাফিয়াদের হাতে জিম্মি হয়ে পড়েছেন। পরিবার থেকে কোটি টাকার বেশি মুক্তিপণ আদায় করেও তাদের অধিকাংশেরই সন্ধান পাওয়া যাচ্ছে না বলে জানিয়েছেন স্বজনরা।

প্রলোভনের ফাঁদে লিবিয়া, তারপর বন্দিশালা

জানা যায়, দক্ষিণ চরকামারকান্দি গ্রামের প্রবাসী মাসুদ মোল্লার ভাই সোহাগ মোল্লাকে সরাসরি ইতালি পাঠানোর কথা বলে ১৪ লাখ টাকায় চুক্তি হয় দালালচক্রের সঙ্গে। এরপর তাকে লিবিয়ায় নিয়ে আটকে রেখে দফায় দফায় মুক্তিপণ আদায় করা হয়। ৪৫ লাখ টাকা পরিশোধ করার পরও সোহাগের কোনো খোঁজ নেই।

একইভাবে সোহেল আহম্মেদ, মাসুম মুন্সি নামের আরও অনেক যুবক এখনো নিখোঁজ। তাদের লিবিয়ায় বন্দি করে নির্যাতন চালানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন পরিবারের সদস্যরা। কারো কারো সঙ্গে দুই মাস ধরে কোনো যোগাযোগ নেই।

দালালের নাম উঠে আসছে বারবার

এই মানবপাচার চক্রের মূলহোতা হিসেবে অভিযুক্ত আবুল কালাম মুন্সি (Abul Kalam Munshi) শিবচরের ‘লপ্ত সরকারের চর’ গ্রামের বাসিন্দা। তিনি ধুরাইল ইউনিয়ন (Dhurail Union)–এর হোসেনেরহাট এলাকার একটি ইসলামী ব্যাংক (Islami Bank) এজেন্ট ব্যাংকিং শাখার কর্মকর্তা। অভিযোগ রয়েছে, অধিকাংশ টাকা তার এজেন্ট ব্যাংকিং একাউন্টেই লেনদেন হয়েছে।

গ্রেফতার, জামিন, উল্টো মামলা

গোয়েন্দা পুলিশ আবুল কালাম মুন্সিকে গ্রেফতার করলেও পরে তিনি জামিনে মুক্ত হন এবং ভুক্তভোগীদের উল্টো মামলা দিয়ে হয়রানি শুরু করেন বলে অভিযোগ পরিবারগুলোর। এতে এলাকায় আতঙ্ক বেড়েছে।

পুলিশের বক্তব্য

মাদারীপুর জেলা পুলিশ (Madaripur Police) জানায়, এই মামলাগুলোতে তদন্ত চলছে। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শেখ সাব্বির হোসেন (Sheikh Sabbir Hossain) বলেন, মানবপাচার এবং মানি লন্ডারিং আইন অনুযায়ী তদন্ত হচ্ছে, শিগগিরই অভিযোগপত্র দেওয়া হবে।

তিনি আরও জানান, যারা ভুক্তভোগীদের হয়রানি করছে, তাদের বিরুদ্ধেও তদন্তসাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।