প্রাইমএশিয়া বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী পারভেজ হত্যা: সিসিটিভি বিশ্লেষণে রাজধানী থেকে গ্রেফতার ৩

প্রাইমএশিয়া বিশ্ববিদ্যালয়-এর শিক্ষার্থী জাহিদুল ইসলাম পারভেজ হত্যা মামলায় রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে তিনজনকে গ্রেফতার করেছে বনানী থানা পুলিশ। সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণের মাধ্যমে অভিযুক্তদের শনাক্ত করে তাদের গ্রেফতার করা হয়।

গ্রেফতারকৃতদের পরিচয় ও অবস্থান

গ্রেফতার হওয়া ব্যক্তিরা হলেন—আল কামাল শেখ ওরফে কামাল (১৯), আলভী হোসেন জুনায়েদ (১৯), এবং আল আমিন সানি (১৯)। তারা কেউই মামলার এজাহারনামীয় আসামি নন, তবে তদন্তে তাদের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেছে।

বনানী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রাসেল সারোয়ার জানান, গোপন তথ্যের ভিত্তিতে রোববার (২০ এপ্রিল) দিবাগত রাতে মহাখালী ওয়ারলেস গেট এলাকা ও তার আশপাশ থেকে তাদের আটক করা হয়। পরে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে গ্রেফতার দেখানো হয়।

সিসিটিভি ফুটেজ ও মোবাইল বিশ্লেষণে তথ্য

পুলিশ জানায়, গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে সিসিটিভি ফুটেজে সরাসরি উপস্থিতি এবং ঘটনার সময় এজাহারনামীয় আসামিদের সঙ্গে মোবাইল যোগাযোগের প্রমাণ পাওয়া গেছে। এমনকি তারা ২ নম্বর এজাহারনামীয় আসামিকে ঘটনাস্থলে ডেকে এনেছিল বলেও তথ্য রয়েছে।

গ্রেফতার তিনজন মামলার অন্য পলাতক আসামিদের পরিচয় ও অবস্থান সম্পর্কে জানে বলে পুলিশের দাবি। তদন্তে আরও গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পেতে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।

ঘটনার পটভূমি

গত শনিবার বিকেলে বনানীতে অবস্থিত ইউনিভার্সিটি অব স্কলার্সের দুই ছাত্রীকে কেন্দ্র করে হাসাহাসির জেরে প্রাইমএশিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পারভেজের বাকবিতণ্ডা হয়। পরে তা মীমাংসা করা হলেও, ক্যাম্পাস থেকে বের হওয়ার পর ৩০-৪০ জন মিলে পারভেজকে ঘিরে ফেলে এবং ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে

তাকে গুরুতর আহত অবস্থায় কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

জানাজা ও দাফন

রোববার দুপুরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল-এ ময়নাতদন্ত শেষে পারভেজের মরদেহ নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে নেওয়া হয়, যেখানে প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। পরে রাত ১০টার দিকে তার গ্রামের বাড়িতে দাফন সম্পন্ন হয়।

মামলা ও আসামিদের তালিকা

পারভেজের মামাতো ভাই হুমায়ুন কবীর বাদী হয়ে বনানী থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীসহ আটজনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে এবং আরও ২৫-৩০ জন অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিকে আসামি করা হয়েছে। উল্লেখ্য, ঘটনার সূত্রপাত যিনি ছিলেন বলে বলা হচ্ছে, সেই কথিত প্রেমিকার নাম মামলায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি।

এজাহারনামীয় আসামিরা হলেন:
– মেহেরাজ ইসলাম (২০)
– আবু জহর গিফফারি পিয়াস (২০)
– মো. মাহাথির হাসান (২০)
– সোবহান নিয়াজ তুষার (২৪)
– হৃদয় মিয়াজি (২৩)
– রিফাত (২১)
– আলী (২১)
– ফাহিম (২২)