বাংলাদেশ-চীন সম্পর্ক আরও গভীর করার আহ্বান জানিয়েছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস (Dr. Muhammad Yunus)। সোমবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনা (State Guest House Jamuna)য় চীনের ইউনান প্রদেশ (Yunnan Province)ের গভর্নর ওয়াং ইউবো (Wang Yubo)র সঙ্গে বৈঠকে তিনি বলেন, “আমরা এত কাছাকাছি, অথচ এত দূরে। চলুন, এই ব্যবধান ঘুচিয়ে ফেলি।”
ঘনিষ্ঠ প্রতিবেশী হবার প্রত্যাশা
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “আপনার এই সফর খুব গুরুত্বপূর্ণ। আমরা শুধু ভালো প্রতিবেশীই নই, আরও ঘনিষ্ঠ প্রতিবেশী হতে চাই। আশা করি আপনি আবারও বাংলাদেশে আসবেন।”
চীনে তার সাম্প্রতিক সফরের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, সেই সফর দুই দেশের সম্পর্কে মোড় ঘোরানো এক মুহূর্ত ছিল। তিনি চীনের উষ্ণ আতিথেয়তার প্রশংসা করেন এবং প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সহানুভূতিপূর্ণ মন্তব্যের জন্য কৃতজ্ঞতা জানান।
ইউনান প্রদেশের পক্ষ থেকে সহযোগিতার আশ্বাস
গভর্নর ইউবো বলেন, “আমার সফরের লক্ষ্য হলো দুই দেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক জোরদার করা। ইউনান প্রদেশ দক্ষিণ এশিয়ার জন্য চীনের উন্মুক্ত হাব হিসেবে কাজ করতে চায়।”
তিনি জানান, ইউনান প্রদেশের একটি চীনা ব্যাংক ইতোমধ্যেই ড. ইউনূস প্রবর্তিত ক্ষুদ্রঋণ পদ্ধতি গ্রহণ করেছে এবং এতে অনেক মানুষ উপকৃত হচ্ছেন। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “দুই দেশের মধ্যে সামাজিক লক্ষ্যগুলোর মিল রয়েছে।”
শিক্ষা, স্বাস্থ্য, বাণিজ্য ও প্রশিক্ষণে সমন্বিত পরিকল্পনা
বৈঠকে উভয়পক্ষ যুব বিনিময়, স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষা এবং বাণিজ্যসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে যৌথ সহযোগিতার কথা তুলে ধরেন। গভর্নর ইউবো সামুদ্রিক খাবার, আম ও কৃষিপণ্যের মতো খাতে বাণিজ্য সম্প্রসারণের প্রস্তাব দেন।
এছাড়া তিনি পেশাগত প্রশিক্ষণ, ভাষা ও ডিজিটাল শিক্ষা সম্প্রসারণের ওপর গুরুত্ব দেন। বলেন, “জনগণের মধ্যে সম্পর্ক আরও জোরদার করতে হবে এবং অঞ্চলগুলোকে কাছাকাছি আনতে হবে।”
চিকিৎসা পর্যটনে চীনের আগ্রহ
স্বাস্থ্য খাতে সহযোগিতা নিয়ে ড. ইউনূস বলেন, “চীনের কুনমিং (Kunming) শহরে বাংলাদেশি রোগীদের জন্য চারটি হাসপাতাল নির্ধারণ ও চিকিৎসা পর্যটন চালুর পদক্ষেপ আমাদের অংশীদারত্বে নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে।”
শিক্ষা খাতেও দু’দেশের মধ্যে বিনিময় কার্যক্রম সম্প্রসারণে গুরুত্বারোপ করা হয়। বৈঠকে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা সমন্বয়কারী ও সিনিয়র সচিব লামিয়া মোর্শেদ (Lamia Morshed) উপস্থিত ছিলেন।