আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধের দাবিতে আইন উপদেষ্টাকে শিক্ষার্থীদের স্মারকলিপি

আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গসংগঠনগুলোকে নিষিদ্ধের দাবিতে আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল (Asif Nazrul)কে স্মারকলিপি দিয়েছেন বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। সোমবার (২১ এপ্রিল) দুপুরে জাতীয় সচিবালয় (Secretariat) এলাকায় ‘গণহত্যাকারী আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধকরণ আন্দোলন’ প্ল্যাটফর্মের ব্যানারে তারা এই কর্মসূচি পালন করেন।

৯ দফা দাবির স্মারকলিপি

শিক্ষার্থীরা দাবি করেন, আওয়ামী লীগ (Awami League) ও তাদের সহযোগী সংগঠনগুলো গণহত্যা, গুম ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের সঙ্গে জড়িত। তাই নির্বাহী আদেশে দলটিকে নিষিদ্ধ এবং নিবন্ধন বাতিল করতে হবে।

স্মারকলিপিতে উল্লেখযোগ্য দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে—
– ৫ আগস্ট অভ্যুত্থানের সময় এবং জুলাই গণহত্যা (July Massacre)র বিচারের দাবিতে দলের নেতাদের বিচার
– গুম হওয়া ব্যক্তিদের খোঁজ
– অবৈধ সম্পদ বাজেয়াপ্ত
– রাজনৈতিক মামলাগুলো প্রত্যাহার
– ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর পুনর্বাসন ও ক্ষতিপূরণ

প্রতিনিধি দলের সদস্যরা

স্মারকলিপি প্রদানকারী পাঁচ সদস্যের প্রতিনিধিদলে ছিলেন:
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী মুসাদ্দিক আলী ইবনে মোহাম্মদ
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী মাসুদ রানা
– ‘জুলাই রেভল্যুশনারি অ্যালায়েন্স’-এর আহ্বায়ক সালেহ মাহমুদ রায়হান
ইস্ট ওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী সাদিক আল আরমান ও রাফিদ এম ভুইয়া

“আশার বাণী শোনাননি আইন উপদেষ্টা”—মুসাদ্দিক

সচিবালয় থেকে বেরিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে মুসাদ্দিক বলেন, “আমরা আশা করেছিলাম, আইন উপদেষ্টা আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের বিষয়ে ইতিবাচক বার্তা দেবেন। কিন্তু তিনি কোনো আশ্বাস দিতে পারেননি। তাই আমরা আরেকটি জুলাই আন্দোলনের মাধ্যমে তাদের নিষিদ্ধ করতে বাধ্য করব।”

তিনি আরও বলেন, “আন্তর্জাতিক চাপের ভয়ে হয়তো সরকার এখনো দলটিকে নিষিদ্ধ করছে না। কিন্তু জনগণ ৫ আগস্টেই রায় দিয়েছে—এই দেশে আওয়ামী লীগের রাজনীতির কোনো স্থান নেই।”

সংবিধানের ধারা সংশোধনের দাবি

আলোচনায় সংবিধানের ১৩২ ধারা বাতিলের দাবি জানানো হয়। এই ধারায় বলা আছে, সরকারি কর্মকর্তা বা পুলিশের বিরুদ্ধে মামলা করতে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের অনুমতি প্রয়োজন। শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, এই অনুমতির বাধ্যবাধকতার কারণে গুমসহ বিভিন্ন ঘটনায় দায়ীদের বিরুদ্ধে মামলা করতে পারছে না ভুক্তভোগীরা।

আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল শিক্ষার্থীদের বক্তব্য গুরুত্বের সঙ্গে শুনেছেন এবং সংশ্লিষ্ট বিষয়ের আইনগত দিক বিবেচনায় নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন বলে জানানো হয়।

“আওয়ামী লীগ আবার মাথা তুলে দাঁড়াতে চাইছে”—সাদিক

সাদিক আল আরমান বলেন, “আওয়ামী লীগ ৫ আগস্টের পর আত্মগোপনে ছিল, এখন আবার বিভিন্ন জায়গায় নিজেদের উপস্থিতি জানান দিতে চাইছে। তাই তাদের রাজনৈতিকভাবে নিষিদ্ধ করাটা এখন সময়ের দাবি।”