নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশনের সাম্প্রতিক প্রতিবেদন ঘিরে দেশজুড়ে আলোচনা-সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে। প্রতিবেদনটি গত ১৯ এপ্রিল প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস (Muhammad Yunus)–এর কাছে জমা দেওয়ার পর থেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নানা প্রতিক্রিয়া দেখা যায়। এরই ধারাবাহিকতায় প্রতিবেদনটি নিয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশনের (As-Sunnah Foundation) চেয়ারম্যান শায়খ আহমাদুল্লাহ (Shaykh Ahmadullah)।
“ধর্ম ও সংস্কৃতির সঙ্গে সাংঘর্ষিক”—শায়খ আহমাদুল্লাহ
শায়খ আহমাদুল্লাহ তার ফেসবুক পেজে এক দীর্ঘ পোস্টে প্রতিবেদনটির বিরুদ্ধে অবস্থান তুলে ধরেন। তার দাবি, প্রতিবেদনটিতে এমন কিছু সুপারিশ রয়েছে যা দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের ধর্মীয় বিশ্বাস, পারিবারিক মূল্যবোধ ও সংস্কৃতির সঙ্গে সাংঘর্ষিক। তিনি প্রতিবেদনটিকে “দেশবাসীর বিশ্বাস ও চিন্তার প্রতি অবজ্ঞার প্রতিচ্ছবি” হিসেবে অভিহিত করেন।
“শহীদের আত্মত্যাগের প্রতি অসম্মান”
শায়খ আহমাদুল্লাহ বলেন, “এই সরকারের জন্ম শহীদের রক্তে। কিন্তু এই কমিশনের তৈরি প্রতিবেদন শহীদদের আত্মত্যাগের মূল্য অস্বীকার করে।” তিনি অভিযোগ করেন, এই ধরনের সুপারিশ আমাদের সমাজের দীর্ঘদিনের পারিবারিক কাঠামো ভেঙে দিতে পারে, যা সামাজিক স্থিতিশীলতার জন্য হুমকিস্বরূপ।
‘পশ্চিমা দৃষ্টিভঙ্গির ছাপ’
শায়খ আহমাদুল্লাহ দাবি করেন, কমিশনের বেশিরভাগ সুপারিশ পশ্চিমা সমাজের আদর্শ অনুসরণ করে তৈরি করা হয়েছে এবং এতে দেশের ধর্মীয় ও সামাজিক কাঠামোর কোনো প্রতিফলন নেই। বিশেষ একটি শ্রেণির নারী নেত্রীরা এই প্রতিবেদন তৈরি করেছেন বলে তিনি মন্তব্য করেন, যারা ‘ধর্মীয় বিশ্বাস ও পারিবারিক মূল্যবোধ ধ্বংসের ষড়যন্ত্রে লিপ্ত’।
“কমিশন অবিলম্বে বাতিল করা হোক”
শায়খ আহমাদুল্লাহর মতে, এই প্রতিবেদন বাতিল করে এমন একটি নতুন নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশন গঠন করা উচিত, যারা দেশের সামাজিক, ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক মূল্যবোধের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হবে।
“বস্তাপঁচা আদর্শ আমদানি নয়”
তার পোস্টে আরও উল্লেখ করা হয়, “যদি পশ্চিমারা পরিবার ব্যবস্থা ও দাম্পত্য জীবনে আমাদের চেয়ে এক শত বছর পিছিয়ে থাকে, তাহলে তাদের সমাজ থেকে আমাদের দেশে মূল্যবোধ আমদানি করার কোনো যৌক্তিকতা নেই।”
শায়খ আহমাদুল্লাহর এই মন্তব্যের প্রেক্ষিতে প্রতিবেদনটি নিয়ে বিতর্ক আরও ঘনীভূত হয়েছে। অনেকেই মনে করছেন, এই প্রস্তাবনাগুলো নিয়ে জনমত নেওয়া এবং আলোচনা হওয়া জরুরি।