সাগর-রুনি হত্যা মামলার নথি আগুনে পুড়ে যাওয়ার কথা হাইকোর্টকে জানাল রাষ্ট্রপক্ষ

সাংবাদিক দম্পতি সাগর সরওয়ার (Sagar Sarowar) ও মেহেরুন রুনি (Meherun Runi) হত্যা মামলার গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্র আগুনে পুড়ে গেছে বলে হাইকোর্টকে জানিয়েছে রাষ্ট্রপক্ষ। মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) বিচারপতি ফাতেমা নজীব ও বিচারপতি শিকদার মাহমুদুর রাজীর সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চে মামলার শুনানিকালে এই তথ্য জানানো হয়।

তদন্তে অগ্রগতি নেই, সময় চেয়েছে র্যাব

রাষ্ট্রপক্ষের পক্ষ থেকে তদন্ত শেষ করতে আরও ৯ মাস সময় চাওয়া হলেও হাইকোর্ট ছয় মাস সময় মঞ্জুর করেছেন। মামলার বাদীপক্ষের পক্ষে আদালতে শুনানি করেন আইনজীবী শিশির মনির, এবং রিটকারীর পক্ষে শুনানি করেন সিনিয়র আইনজীবী মনজিল মোরসেদ

২০১২ সালের বর্বর হত্যাকাণ্ড

২০১২ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি রাতে ঢাকার পশ্চিম রাজাবাজারে নির্মমভাবে খুন হন সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনি। পরদিন ভোরে ভাড়া বাসা থেকে তাদের ক্ষত-বিক্ষত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। রুনির ভাই নওশের আলী রোমান বাদী হয়ে শেরেবাংলা নগর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।

তদন্তের দায় ও বারবার সময় প্রার্থনা

প্রথমে মামলার তদন্ত করে শেরেবাংলা নগর থানা, এরপর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) এবং সর্বশেষ হাইকোর্টের নির্দেশে ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০১২ থেকে মামলার তদন্তভার দেওয়া হয় র্যাব-কে। কিন্তু এক যুগ পার হলেও আজ পর্যন্ত র্যাব চূড়ান্ত কোনো তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে পারেনি।

মানবাধিকার সংগঠনের রিট ও হাইকোর্টের রুল

জনস্বার্থে হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশ ২০১২ সালে একটি রিট করে। হাইকোর্ট তখন রুল জারি করে জানতে চায়, কেন হত্যাকারীদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনার নির্দেশ দেওয়া হবে না। মামলার অগ্রগতি না থাকায় এখনো চলছে বিচার প্রক্রিয়ার অপেক্ষা।

মামলা পরিচালনার নতুন আইনজীবী

২০২৩ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর থেকে মামলায় বাদীপক্ষে আইনি লড়াইয়ের দায়িত্বে রয়েছেন শিশির মনির।

আইনজীবীর মন্তব্য

আইনজীবী মনজিল মোরসেদ বলেন, “আমরা দীর্ঘদিন ধরে বলে আসছি—এ মামলার তদন্তে গড়িমসি হচ্ছে। এত বড় ঘটনা, অথচ আজ পর্যন্ত বিচার হয়নি। নথি পুড়ে যাওয়ার বিষয়টি অবশ্যই উদ্বেগজনক।”