গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা (Sheikh Hasina)–র পতনের পর দেশে কেন একটি ‘বিপ্লবী সরকার’ নয় বরং ‘অন্তর্বর্তী সরকার (Interim Government)’ গঠিত হলো—সেই প্রশ্নের জবাব দিয়েছেন আইন, বিচার ও সংসদ ও প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল (Asif Nazrul)।
‘গণঅভ্যুত্থান হলেও বিপ্লব হয়নি’
রাজধানীর হেয়ার রোডে নিজের সরকারি বাসভবনে একান্ত সাক্ষাৎকারে ড. আসিফ নজরুল বলেন, ‘‘৫ আগস্টের ঘটনাকে আমি গণঅভ্যুত্থান বলব। সেখানে বিপ্লবের উপাদান ছিল—কিন্তু বিপ্লব ছিল না। বিপ্লবের জন্য যেমন রোডম্যাপ, প্রস্তুতি এবং বাহিনী প্রয়োজন, সেগুলো আমাদের ছিল না। শেখ হাসিনা দ্রুত লেজ গুটিয়ে পালিয়ে গেছেন, এমনটা কেউ কল্পনাও করেনি। ফলে আমরা সরকার গঠনের জন্য আগেভাগে প্রস্তুত ছিলাম না।’’
তিনি বলেন, ‘‘তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীর পতন হঠাৎ ঘটায় সরকার গঠনে সময় ও পরিকল্পনার অভাব ছিল। তখন প্রধান উদ্বেগ ছিল—কীভাবে তাকে সরানো যায়।’’
নির্বাচন নিয়ে অনিশ্চয়তা নয়, বিচার ও জনমতই নির্ধারণ করবে ভবিষ্যৎ
সাক্ষাৎকারে ড. আসিফ নজরুল বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস (Muhammad Yunus) যে নির্বাচনকালীন টাইমলাইন দিয়েছেন, সেটি অপরিবর্তনীয় থাকবে। “এখনো অনেক সময় আছে—ডিসেম্বরের আগেই নির্বাচন হবে। এই সময়ের মধ্যে বিচারিক প্রক্রিয়া এবং জনমতের প্রতিফলন স্পষ্ট হবে। আওয়ামী লীগ নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে কি না, সেটাও এর মধ্য দিয়েই নির্ধারিত হবে।”
তিনি আরও জানান, “আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ করার বিষয়ে এখনো কোনো নির্বাহী সিদ্ধান্ত বা আনুষ্ঠানিক আলোচনা হয়নি। তবে বিচারিক ও জনমতের ভিত্তিতেই এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত আসবে।”
‘গণঅভ্যুত্থান শক্তি ঐক্যবদ্ধ ছিল’
অন্তর্বর্তী সরকার গঠনে নিজের ভূমিকার কথা উল্লেখ করে আসিফ নজরুল বলেন, “আমার চেষ্টা ছিল—যে শক্তিগুলো গণঅভ্যুত্থানের পক্ষে ছিল, তারা যেন ঐক্যবদ্ধ থাকে এবং ছাত্রনেতাদের কণ্ঠস্বর যথাযথ গুরুত্ব পায়।”
তিনি বলেন, “শুরুতে এই ঐক্য ছিল, কিন্তু পরবর্তীকালে কোথাও কোথাও মতভেদ দেখা দিয়েছে, যা গণ-আন্দোলনের ভবিষ্যতের জন্য আশঙ্কার বিষয়।”