লন্ডনে বিএনপি-জামায়াত নেতাদের ‘সমঝোতা বৈঠক’, ঐক্যের পথে অগ্রগতি

লন্ডন (London) শহরে সম্প্রতি অনুষ্ঠিত বিএনপি (BNP) ও জামায়াতে ইসলামী (Jamaat-e-Islami) নেতাদের এক ঘণ্টার এক বৈঠক রাজনৈতিক মহলে কৌতূহল ও আলোচনার জন্ম দিয়েছে। বৈঠকটি আনুষ্ঠানিকভাবে ‘মানবিক’ আখ্যা পেলেও, বেশিরভাগ সময় জুড়েই রাজনীতি নিয়ে বিস্তর আলোচনা হয়েছে। বৈঠকে অংশ নেন জামায়াতের আমির ডা. শফিকুর রহমান (Shafiqur Rahman) ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান (Tarique Rahman)।

বিএনপি-জামায়াত: পুরনো দূরত্ব কাটিয়ে ফের সমঝোতার পথে?

গত সপ্তাহে তারেক রহমানের লন্ডনের বাসভবনে জামায়াত আমিরের আকস্মিক উপস্থিতিতে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। উপস্থিত ছিলেন অসুস্থ বেগম খালেদা জিয়া (Khaleda Zia)। বৈঠকের সূচনা হয় খালেদা জিয়ার শারীরিক খোঁজখবর দিয়ে, তবে কিছুক্ষণের মধ্যেই রাজনীতির প্রসঙ্গ উঠে আসে।

তৎকালীন ২০০১ সালের চারদলীয় জোট এবং জামায়াতের মন্ত্রীসভায় অংশগ্রহণের ইতিহাস আলোচনায় আসে। বৈঠকে দুই দলের মধ্যে অতীতের দূরত্ব, বিভাজন, পরস্পর দোষারোপ ও রাজনৈতিক ভুল বোঝাবুঝি নিয়ে খোলামেলা আলোচনা হয়। নেতারা জানান, তারা ঐক্য নষ্ট করার জন্য কেউ সচেতনভাবে কিছু করেননি।

রাজনৈতিক ঐক্যের প্রতি খালেদা জিয়ার ইঙ্গিত

খালেদা জিয়া বৈঠকে খুব কম কথা বলেন, তবে তার স্বল্প কথার মধ্যেও ‘ঐক্য’ এবং ‘সহাবস্থানের’ বার্তা স্পষ্ট ছিল। তারেক রহমান আলোচনা এগিয়ে নেন এবং বলেন, বিএনপির কোনো নীতিগত সিদ্ধান্ত ছিল না জামায়াত থেকে সরে আসার। জামায়াত আমিরও বলেন, “আমরা কখনোই ঐক্য ভাঙার চেষ্টায় ছিলাম না।”

নির্বাচনী প্রস্তুতি ও ভবিষ্যতের পথরেখা

নির্বাচন নিয়ে দুই দলের অবস্থান এখনো পুরোপুরি মিলছে না। তবে তারা একমত হয়েছেন—বাইরের শক্তির ষড়যন্ত্র ঠেকাতে একসঙ্গে কাজ করা জরুরি। ভবিষ্যতে সম্পর্ক নষ্ট হতে পারে এমন কোনো কাজ থেকে বিরত থাকার অলিখিত সিদ্ধান্তেও পৌঁছেছেন নেতারা।

এছাড়াও লন্ডন বৈঠকে রাজনৈতিক সহনশীলতা, ধৈর্য, সংযম এবং সমন্বয়ের ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়। ঢাকায় দলের ঘনিষ্ঠ সূত্র জানায়, ভবিষ্যতে আরও বৈঠকের সম্ভাবনা আছে, যাতে মাঠপর্যায়ে ঐক্যের বার্তা স্পষ্টভাবে পৌঁছায়।