ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (Dhaka North City Corporation)–এর প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজের উপদেষ্টা হিসেবে নিযুক্ত হয়েছেন ড. আমিনুল ইসলাম (Dr. Aminul Islam)। তবে তার নাগরিকত্ব নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে, কারণ তিনি এখন আর বাংলাদেশের নাগরিক নন—২০২২ সালের মার্চে তিনি বাংলাদেশের নাগরিকত্ব ছেড়ে এস্তোনিয়ার নাগরিকত্ব গ্রহণ করেছেন।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নথিতে নিশ্চিত
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় (Ministry of Home Affairs)–এর সুরক্ষা সেবা বিভাগের বহিরাগমন শাখা-৩ এর সিনিয়র সহকারী সচিব কানিজ ফাতেমা স্বাক্ষরিত একটি চিঠি থেকে জানা যায়, আমিনুল ইসলাম বাংলাদেশের নাগরিকত্ব ত্যাগ করে ইউরোপের দেশ এস্তোনিয়া (Estonia)র নাগরিকত্ব গ্রহণ করেছেন। তিনি এই সিদ্ধান্তের পেছনে সরাসরি কারণ হিসেবে বিদেশি নাগরিকত্ব গ্রহণের ইচ্ছার কথা উল্লেখ করেন এবং নাগরিকত্ব ত্যাগের ফি পরিশোধ করে সরকারের কাছ থেকে আনুষ্ঠানিক অনুমোদনও পান।
ডিএনসিসি-তে নিযুক্ত উপদেষ্টা হিসেবে
তথ্য অনুযায়ী, ১৭ এপ্রিল ডিএনসিসি কর্তৃপক্ষ স্থানীয় সরকার (সিটি করপোরেশন) আইন ২০০৯-এর ৫৩ ধারা অনুসারে আমিনুল ইসলামকে প্রশাসকের উপদেষ্টা হিসেবে নিযুক্ত করে। এই পদটি “অবৈতনিক” হিসেবে বিবেচিত হলেও, নাগরিকত্ব ত্যাগ করার পর একজন বিদেশিকে এই পদে নিয়োগ নিয়ে সংশয় তৈরি হয়েছে।
একাডেমিক ও সাহিত্যিক পরিচিতি
ঢাকার নাখালপাড়ায় জন্মগ্রহণকারী আমিনুল ইসলাম ঢাকা রেসিডেন্সিয়াল মডেল কলেজ থেকে উচ্চমাধ্যমিক সম্পন্ন করেন। এরপর শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (Shahjalal University of Science and Technology) থেকে স্নাতক শেষ করে সুইডেন থেকে মাস্টার্স ও যুক্তরাজ্যে পিএইচডি করেন।
বর্তমানে তিনি এস্তোনিয়ার এন্টারপ্রেনারশিপ ইউনিভার্সিটিতে টেকসই উন্নয়নে সিনিয়র লেকচারার হিসেবে কর্মরত আছেন। পাশাপাশি তিনি জনপ্রিয় সাহিত্যিক হিসেবেও পরিচিত, যার বই ‘লাইফ অ্যাজ ইট ইজ’ রকমারির বেস্ট সেলার হয়। তার লেখা ‘নিলী নীলিমা’ ও ‘গ্রীষ্মের ছুটিতে দুঃস্বপ্ন’ বই দুটি সাম্প্রতিক বইমেলায় ব্যাপক সাড়া ফেলেছে।
আইনি ও প্রশাসনিক প্রশ্ন
বর্তমানে প্রশ্ন উঠেছে, একজন বিদেশি নাগরিক কীভাবে সিটি করপোরেশনের উপদেষ্টা পদে আসীন হন? এবং এই বিষয়ে যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমোদন থাকলেও আইনগত দিক থেকে তা কতটা গ্রহণযোগ্য, তা এখন খতিয়ে দেখার দাবি তুলেছে বিভিন্ন মহল।