সমালোচনার মুখে পদত্যাগ করলেন ডিএনসিসি উপদেষ্টা ড. আমিনুল

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসিDNCC) প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ কর্তৃক নিযুক্ত উপদেষ্টা ড. আমিনুল ইসলাম অবশেষে সমালোচনার মুখে পদত্যাগ করেছেন। মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) সন্ধ্যায় নিজের ফেসবুক আইডিতে এক সংক্ষিপ্ত পোস্টে তিনি লেখেন, “I already resigned, peace.”

নাগরিকত্ব ইস্যুতে বিতর্ক

ড. আমিনুল ইসলাম বর্তমানে উত্তর-পূর্ব ইউরোপের দেশ এস্তোনিয়া (Estonia)র নাগরিক এবং সেখানকার এন্টারপ্রেনারশিপ ইউনিভার্সিটিতে সিনিয়র লেকচারার হিসেবে কর্মরত। জানা গেছে, তিনি ২০২২ সালের মার্চে বাংলাদেশের নাগরিকত্ব পরিত্যাগ করে এস্তোনিয়ার নাগরিকত্ব গ্রহণ করেন। এই তথ্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হওয়ার পর শুরু হয় সমালোচনার ঝড়।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কর্তৃক স্বাক্ষরিত একটি আদেশে বলা হয়, ড. আমিনুল ইসলাম বাংলাদেশের নাগরিকত্ব পরিত্যাগের আবেদন করেছিলেন এবং তা মঞ্জুরও করা হয়েছে।

রাজনৈতিক যোগসাজশের অভিযোগ

নেটিজেনদের দাবি, ড. আমিনুলের এই নিয়োগের পেছনে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া প্রভাব রেখেছেন। যদিও উপদেষ্টার ব্যক্তিগত কর্মকর্তা মো. মাহফুজুল আলম ভূঁইয়া এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন এবং বলেছেন, “এ বিষয়ে উপদেষ্টা অবগত ছিলেন না।”

ফেসবুক পোস্টে উপদেষ্টা হওয়ার আগ্রহ

সমালোচনার মধ্যে উঠে আসে ড. আমিনুলের আগের একটি ফেসবুক পোস্ট, যেখানে তিনি নিজের উপদেষ্টা হওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করে লেখেন—“আপনাদের কাছে একটা বিনীত অনুরোধ—প্লিজ, লেখাটা নিজেদের প্রফাইলে, গ্রুপে, পেজে শেয়ার করে আমাকে উপদেষ্টা হতে সাহায্য করুন।”

নেটিজেনদের মতে, তিনি কয়েক মাস আগে নিজেই ফেসবুকে নিজেকে উপদেষ্টা হিসেবে নিয়োগের আকুতি জানিয়েছিলেন এবং অতীতে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা কিংবা সাত কলেজের ভিসি হওয়ার ইচ্ছাও প্রকাশ করেছিলেন।

ডিএনসিসির অফিস আদেশ

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন-এর পক্ষ থেকে দেওয়া অফিস আদেশে বলা হয়েছিল, “স্থানীয় সরকার (সিটি করপোরেশন) আইন, ২০০৯-এর ৫৩ নং ধারা অনুযায়ী, প্রশাসকের পরামর্শে ড. আমিনুল ইসলামকে উপদেষ্টা হিসেবে নিযুক্ত করা হয়।” এটি ছিল একটি অবৈতনিক পদ।

ড. আমিনুলের পেশাগত পটভূমি

ড. আমিনুল ইসলামের জন্ম ঢাকার নাখালপাড়ায়। তিনি ঢাকা রেসিডেনসিয়াল মডেল কলেজ থেকে এইচএসসি, এরপর শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গ্র্যাজুয়েশন করেন। পরবর্তীতে সুইডেন থেকে মাস্টার্স এবং যুক্তরাজ্য থেকে পিএইচডি সম্পন্ন করেন।

লেখক হিসেবেও জনপ্রিয় এই ব্যক্তি ‘লাইফ অ্যাজ ইট ইজ’, ‘নিলী নীলিমা’ এবং ‘গ্রীষ্মের ছুটিতে দুঃস্বপ্ন’ বইগুলোর জন্য পরিচিতি পান।