পৃথিবীর জন্য আশার বাতিঘর হতে চায় বাংলাদেশ: ড. মুহাম্মদ ইউনূস

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, বাংলাদেশ এখন এমন একটি সময়ে দাঁড়িয়ে আছে, যখন একটি নতুন সামাজিক চুক্তি গঠনের ঐতিহাসিক সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। এই চুক্তির মাধ্যমে রাষ্ট্র ও জনগণ বিশেষ করে যুবসমাজ, অন্তর্ভুক্তিমূলক ব্যবস্থা, ঐতিহ্য, ন্যায়বিচার, মর্যাদা ও সমতার ভিত্তিতে একটি সম্মিলিত ভবিষ্যৎ নির্মাণে সহায়তা করবে।

মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) কাতারের দোহার ‘আর্থনা শীর্ষ সম্মেলন ২০২৫’-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে দেওয়া বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন।

আশার বাতিঘর হয়ে উঠার আকাঙ্ক্ষা

ড. ইউনূস বলেন, “আমরা পৃথিবীর জন্য আশার এক বাতিঘর হিসেবে আত্মপ্রকাশ করতে চাই। আমাদের বন্ধু ও অংশীদারদের আহ্বান জানাই—একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক সামাজিক চুক্তি পুনর্লিখনের জন্য, পাশাপাশি সামাজিক ব্যবসা, আর্থিক অন্তর্ভুক্তি এবং মাইক্রোফাইন্যান্সের ভূমিকা নিয়ে পুনরায় ভাবতে হবে, যা প্রান্তিক জনগণের জন্য টেকসই উন্নয়ন ও অর্থনৈতিক সুযোগ সৃষ্টি করতে পারে।”

চ্যালেঞ্জের মুখে বিশ্ব এবং সমাধানের আহ্বান

তিনি উল্লেখ করেন, “আমরা এমন এক সময় পার করছি যেখানে বহুপাক্ষিকতা হুমকির মুখে, জলবায়ু পরিবর্তনের গতি বেড়েছে, ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনা ক্রমবর্ধমান এবং মানবিক সংকট ক্রমেই গভীরতর হচ্ছে। অতএব, এখন আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক সহযোগিতার পুনর্জাগরণ অতীব জরুরি।”

কাতারের উদ্যোগের প্রশংসা

অধ্যাপক ইউনূস কাতারের নেতৃত্বে আয়োজিত সম্মেলনের প্রশংসা করে বলেন, “কাতার যেভাবে ‘আর্থনা শীর্ষ সম্মেলন’-এর মতো গুরুত্বপূর্ণ উদ্যোগ নিয়েছে, তা উদ্ভাবন, ঐতিহ্য ও অংশীদারিত্বের এক অসাধারণ দৃষ্টান্ত। এই উদ্যোগ জলবায়ু সংকট, সামাজিক বৈষম্য এবং কর্মসংস্থানের ভবিষ্যৎ মোকাবিলায় সহায়ক হবে।”

তিনি আরও বলেন, “এই নতুন সামাজিক চুক্তিতে আর্থিক অন্তর্ভুক্তি ও প্রান্তিক জনগণের ক্ষমতায়নকে মৌলিক ভিত্তি হিসেবে বিবেচনা করতে হবে।”

সম্মেলনের প্রতিপাদ্য

দোহায় শুরু হওয়া এই দুদিনব্যাপী সম্মেলনের প্রতিপাদ্য—‘আমাদের উত্তরাধিকার গড়ে তোলা: স্থায়িত্ব, উদ্ভাবন ও ঐতিহ্যবাহী জ্ঞান’।

এ সময় ইউনূস কাতার ফাউন্ডেশনের চেয়ারপারসন শেখ মোজা বিনতে নাসের এবং ভাইস চেয়ারপারসন ও সিইও শেখ হিন্দ বিনতে হামাদ আল থানি-কে সম্মেলন আয়োজনের জন্য ধন্যবাদ জানান।