সরকার প্রশাসনের কাছে জিম্মি হয়ে যাচ্ছে: এনসিপি নেতা সারোয়ার তুষার

জাতীয় নাগরিক পার্টি (National Citizen Party)–এর যুগ্ম আহ্বায়ক সারোয়ার তুষার (Sarowar Tushar) মনে করেন, অন্তর্বর্তী সরকার প্রশাসনের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ না পাওয়ায় অনেক ক্ষেত্রে সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে জিম্মি হয়ে পড়ছে। আজকের পত্রিকাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, সরকার ও রাষ্ট্র এখন আলাদা, ফলে আগের মতো একক প্রভাব নেই। প্রশাসনে যারা রয়েছেন, তারা আগের রাজনৈতিক কাঠামোর সুবিধাভোগী এবং পরিবর্তনের গতি শ্লথ করে দিচ্ছেন।

স্থানীয় পর্যায়ে সংগঠন ও নিবন্ধন নিয়ে এনসিপির প্রস্তুতি

সারোয়ার তুষার বলেন, মে মাসের মাঝামাঝি সময়ে নির্বাচন কমিশন (Election Commission)–এর শর্ত পূরণ করে নিবন্ধন পেতে চায় এনসিপি। গঠনতন্ত্রের খসড়া চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে এবং একটি স্বচ্ছ ও জবাবদিহিমূলক দলীয় কাঠামো গড়ার প্রতিশ্রুতি দেন তিনি। তিনি জানান, দলকে ব্যক্তিনির্ভর না করে একটি প্রক্রিয়াভিত্তিক সংগঠনে রূপান্তরের লক্ষ্যে কাজ চলছে।

নির্বাচনী প্রস্তুতি ও জোট প্রসঙ্গে

তিনি বলেন, জাতীয় নির্বাচনে ৩০০ আসনেই প্রার্থী দেওয়ার লক্ষ্যে প্রস্তুতি চলছে। তবে এখনো কোনো জোটে যাওয়ার সিদ্ধান্ত হয়নি।

জুলাই ঘোষণাপত্র নিয়ে অবস্থান

সারোয়ার তুষার জানান, ‘জুলাই গণ-অভ্যুত্থান’–কে ইতিহাসের স্বীকৃতি দিতে জুলাই ঘোষণাপত্র তৈরি জরুরি। তিনি বলেন, “এই ঘোষণাপত্র মুক্তিযুদ্ধের ঘোষণাপত্রের মতোই লিগ্যাল ও ঐতিহাসিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ। এখনই অনেকে ‘তথাকথিত আন্দোলন’ বলে মন্তব্য করছে, ভবিষ্যতে হয়তো আরও অস্বীকারের চেষ্টা হবে।”

প্রশাসনে বিএনপির প্রভাব ও রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব

নাহিদ ইসলাম (Nahid Islam)–এর বক্তব্যের ব্যাখ্যায় তিনি বলেন, বাস্তবতা হলো স্থানীয় প্রশাসনে বিএনপির এক ধরনের প্রভাব তৈরি হয়েছে। ওসি, এসপি, ডিসির পদে নিয়োগেও প্রভাব রয়েছে। সরকারি সুবিধার ক্ষেত্রেও বিএনপির লোকজন এগিয়ে রয়েছে।

অন্তর্বর্তী সরকারের সীমাবদ্ধতা

তিনি জানান, সরকার রাজনৈতিক না হওয়ায় প্রশাসনের ওপর গ্রিপ তৈরি করতে কষ্ট হচ্ছে। প্রশাসনের অনেকেই পুরোনো কাঠামোর সুবিধাভোগী হওয়ায় পরিবর্তনের গতিও শ্লথ হচ্ছে। এতে সরকার অনেক সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে বাধার সম্মুখীন হচ্ছে।

অন্যান্য রাজনৈতিক দলের সঙ্গে দূরত্বের কারণ

তুষার বলেন, এনসিপি গণ-অভ্যুত্থানের পটভূমি থেকে গঠিত, তাই বিদ্যমান ক্ষমতাকাঠামোর রূপান্তর চায়। অন্যদিকে, পুরোনো দলগুলো সেই কাঠামো টিকিয়ে রাখতে চায়। ফলে দ্বন্দ্ব অনিবার্য।

বয়সনীতি নিয়ে ব্যাখ্যা

স্থানীয় পর্যায়ে ৪০ বছর বয়স ন্যূনতম শর্ত রাখা নিয়ে তিনি বলেন, এটা ছিল রাজনৈতিক ভারসাম্য ও গ্রহণযোগ্যতা নিশ্চিতের জন্য। তবে এ বিষয়ে আলোচনা করে পুনর্বিবেচনার সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেননি।