জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) ঘনিষ্ঠ প্রবক্তা ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক দাদাভাই পিনাকী একটি সামাজিক মাধ্যমে দেওয়া পোস্টে বিএনপির জ্যেষ্ঠ নেতা মির্জা আব্বাস (Mirza Abbas)–এর সাম্প্রতিক মন্তব্যের তীব্র সমালোচনা করেন।
প্রেক্ষাপট
বিএনপি নেতা মির্জা আব্বাস সম্প্রতি এনসিপির কিছু নেতার দেশের বাইরে অবস্থান নিয়ে প্রশ্ন তোলেন এবং ‘দেশত্যাগ’ সংক্রান্ত মন্তব্য করেন। এর জবাবে দাদাভাই পিনাকী সামাজিক মাধ্যমে একটি ব্যঙ্গাত্মক ও ক্ষুব্ধ পোস্ট দেন, যেখানে তিনি সরাসরি ব্যক্তিগতভাবে মির্জা আব্বাসের বক্তব্যের সমালোচনা করেন এবং তীব্র ভাষায় তা প্রত্যাখ্যান করেন।
দাদাভাই পিনাকীর বক্তব্যের মূল সারাংশ:
- এনসিপির শীর্ষ নেতাদের দেশত্যাগ নিয়ে মির্জা আব্বাসের মন্তব্যকে ‘দ্বিচারিতা’ হিসেবে আখ্যা দেন।
- বিএনপি নেত্রী ও নেতা তারেক রহমানের বিদেশে অবস্থানের কথা উল্লেখ করে বলেন, “যাকে প্রধানমন্ত্রী বানাতে চান, তিনি থাকবেন লন্ডনে—আর যাকে নিয়ে আপনার সমস্যা, সে দেশে না থাকলে সমস্যা?”
- তিনি উল্লেখ করেন, জুলাই–আগস্টের ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেওয়ার কারণে এনসিপির নেতৃত্বের রাজনৈতিক অবস্থান ‘আত্মত্যাগমূলক ও বৈপ্লবিক’, যা তাদের কথা বলার অধিকার দেয়।
ভাষার বিতর্ক ও ভিন্নমত
পোস্টটিতে ব্যবহৃত কিছু শব্দ ও বাক্য বিতর্কের জন্ম দিয়েছে, যেগুলোকে অনেকে “সীমালঙ্ঘন” বলছেন। যদিও এটিকে ‘রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়া’ হিসেবে দেখা যেতে পারে, তবে ভাষার ব্যবহারে শালীনতা রক্ষা করা উচিত বলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মত।
বিশ্লেষণ: পুরনো বনাম নতুন রাজনীতির দ্বন্দ্ব?
রাজনীতির মাঠে বর্তমান সময়ের সবচেয়ে স্পষ্ট বৈপরীত্য লক্ষ্য করা যাচ্ছে দুই ধারায়—
– প্রথাগত দল (যেমন বিএনপি (BNP))
– নতুন উদীয়মান শক্তি (যেমন জাতীয় নাগরিক পার্টি (National Citizen Party))
দুই দলের মধ্যে আদর্শ, সাংগঠনিক সংস্কৃতি এবং প্রকাশভঙ্গির পার্থক্য থাকলেও, একে অপরের প্রতি কটাক্ষের মাত্রা রাজনৈতিক অঙ্গনে উত্তেজনা তৈরি করছে।
অতীত ইতিহাস ও ব্যক্তিগত অভিমান
পিনাকীর পোস্টে যেভাবে ব্যক্তিগত আক্রমণ এসেছে, তা রাজনীতিতে “রানিং ফ্রাস্ট্রেশন” বা “আন্তর্দলীয় অভিমান”-এর প্রতিফলন বলেই অনেকে মনে করছেন। বিশেষ করে যারা ২০২৪ সালের অভ্যুত্থানে সক্রিয় ছিলেন, তাদের মধ্যে কিছুটা হতাশাও রয়েছে যে, পুরনো রাজনীতির নেতৃত্ব হয়তো আবার দৃশ্যপটে ফিরে আসছে।
উপসংহার
দাদাভাই পিনাকীর এই প্রতিক্রিয়া সাম্প্রতিক সময়ের একটি গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক উত্তেজনার প্রতিফলন। এটি শুধু মির্জা আব্বাসের বক্তব্যের জবাব নয়, বরং পুরনো বনাম নতুন রাজনৈতিক ধারার পারস্পরিক অসন্তুষ্টির বহিঃপ্রকাশ।
তবে বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই উত্তপ্ত বাক্যবিনিময়ের বাইরে গিয়ে দুই পক্ষকেই জনগণের সামনে নিজেদের গ্রহণযোগ্যতা প্রমাণ করতে হবে কাজ ও আচরণ দিয়ে।
“`