দেশের অভ্যন্তরে নেতৃত্ব খুঁজছে আওয়ামী লীগ: সংকট কাটাতে ফের সক্রিয় হওয়ার চেষ্টা

ছাত্র-জনতার গণআন্দোলনে ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর চরম অস্তিত্ব সংকটে পড়েছে আওয়ামী লীগ (Awami League)। দলের শীর্ষ নেতৃত্ব বিদেশে অবস্থান করায় বর্তমানে ভেতরে থেকে দলকে সংগঠিত করতে নতুন নেতৃত্ব খুঁজছে দলটি।

গণআন্দোলনের পরবর্তী বাস্তবতা

গত বছরের ৫ আগস্ট গণআন্দোলনের মুখে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমতাচ্যুত হন এবং ভারতে আশ্রয় নেন। দীর্ঘ দেড় দশক ধরে শাসন করা এ দলটি এখন রাজনৈতিকভাবে চরম সংকটে পড়েছে।

দলের বেশিরভাগ কেন্দ্রীয় নেতা বর্তমানে ভারত, ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করছেন। সেখান থেকেই তারা দলকে পুনর্গঠনের কৌশল নিয়ে ভাবছেন।

অভ্যন্তরীণ নেতৃত্ব খোঁজার চেষ্টা

বর্তমানে দলটির লক্ষ্য হলো—দেশের ভেতর থেকেই এমন একজন নেতাকে সামনে আনা, যিনি সাহস নিয়ে প্রকাশ্যে এসে বিপর্যস্ত সংগঠনকে সংগঠিত করতে পারবেন।

এই আলোচনায় উঠে আসছে সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ এবং সাবেক মন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরী-এর নাম। তবে মামলার ভয় এবং অনিশ্চয়তাজনিত কারণে কেউ এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে এগিয়ে আসেননি।

দলের নেতাদের মতে, কারো নাম প্রকাশ করলেই সে নতুন করে রাজনৈতিক হয়রানির মুখে পড়তে পারে, যা পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলবে।

শেখ হাসিনার বক্তব্য ও দলের মনোভাব

দলের সভাপতি শেখ হাসিনা বলেছেন, “দেশের ভেতরে যারা সাহস নিয়ে দলের হাল ধরবে, তারাই ভবিষ্যতের নেতা।” তবে এখন পর্যন্ত কেউ সেই দায়িত্ব নেয়ার মতো অবস্থানে আসেননি।

বিদেশে অবস্থানরত কেন্দ্রীয় নেতা ও সাবেক তথ্য প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত বলেন, “সরকার পতনের সময় সংঘটিত হত্যাকাণ্ডের বিচার দাবি করছি আমরা, তবে অনুশোচনার প্রশ্নে আওয়ামী লীগ কেবল জনগণের কাছে জবাবদিহি করবে।”

প্রতিক্রিয়া ও পরিকল্পনা

দলটির অভ্যন্তরীণ আলোচনা থেকে জানা গেছে, রাজনৈতিক কৌশলে কিছু ভুল ছিল তা স্বীকার করছেন কিছু নেতা। যদিও আনুষ্ঠানিকভাবে এখনো দল এই ভুল মেনে নেয়নি। তারা এখন সময় ও কৌশল বিবেচনা করে পরিকল্পিতভাবে আবারও রাজনীতিতে সক্রিয় হওয়ার চেষ্টা করছে।

তবে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো—তারা এখনো ‘রিফাইন্ড আওয়ামী লীগ’ কিংবা শেখ হাসিনার বিকল্প নেতৃত্ব ভাবছে না। বরং ধারণা করা হচ্ছে, অচিরেই তারা নতুন কোনো রূপে পুনরায় রাজনৈতিক ময়দানে ফিরে আসার প্রস্তুতি নিচ্ছে।