খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (কুয়েট)–এর উপাচার্য অধ্যাপক মুহাম্মদ মাছুদ ও প্রোভিসি অধ্যাপক এসকে শরীফুল আলম অবশেষে পদত্যাগ করেছেন। শিক্ষার্থীদের টানা আন্দোলন ও আমরণ অনশনের পরিপ্রেক্ষিতে বুধবার রাতে তারা শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পদত্যাগপত্র জমা দেন।
আন্দোলনের পটভূমি
গত ১৮ ফেব্রুয়ারি কুয়েটে ছাত্ররাজনীতি বন্ধের দাবিকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে শতাধিক ব্যক্তি আহত হন। পরদিন শিক্ষার্থীরা প্রশাসনিক ও একাডেমিক ভবনে তালা লাগিয়ে দেন। ২৫ ফেব্রুয়ারি সব আবাসিক হল অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়। এরপর শিক্ষার্থীরা হল খোলার দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেন।
১৪ এপ্রিল সংঘর্ষে জড়িত থাকার অভিযোগে ৩৭ শিক্ষার্থীকে সাময়িক বহিষ্কার করা হলে আন্দোলন আরও তীব্র হয়। এরপর ২১ এপ্রিল উপাচার্যের পদত্যাগ দাবিতে ২৪ ঘণ্টার আলটিমেটাম দিয়ে শিক্ষার্থীরা আমরণ অনশনে বসেন।
পদত্যাগ ও অনশন ভাঙা
শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের প্রেক্ষিতে শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়, কুয়েট প্রশাসন পুনর্গঠনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে এবং শিগগিরই নতুন উপাচার্য ও প্রোভিসি নিয়োগের জন্য সার্চ কমিটি গঠন করা হবে।
৫৮ ঘণ্টার অনশনের পর বুধবার দিবাগত রাত ১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সদস্য অধ্যাপক তানজীমউদ্দিন খান অনশনরত শিক্ষার্থীদের জুস পান করিয়ে অনশন ভাঙান।
শিক্ষার্থীদের প্রতিক্রিয়া
‘কুয়েট ১৯’ নামের একটি ফেসবুক পেজে শিক্ষার্থীরা লেখেন, “আলহামদুলিল্লাহ। আমরা জিতেছি। আমার ভাইরা জিতেছে। মাসুদ পদত্যাগ করেছে!” আন্দোলনের মাধ্যমে তাদের একদফা দাবি আদায় হওয়ায় শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিজয়ের অনুভূতি ছড়িয়ে পড়ে।
ভবিষ্যৎ ব্যবস্থা
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, নিয়মিত কার্যক্রম চালিয়ে যেতে জ্যেষ্ঠ কোনো অধ্যাপককে সাময়িক উপাচার্য হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হবে। শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা ও শিক্ষাজীবন স্বাভাবিক করতে দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হবে।