আওয়ামী লীগ নেতারা পলাতক, বিএনপি নেত্রী নন—রিজভীর মন্তব্যে রাজনৈতিক উত্তাপ

বিএনপি–র সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, আওয়ামী লীগ নেতারা এখন পলাতক অবস্থায়, অথচ বিএনপির নেত্রী খালেদা জিয়া কখনো পালিয়ে যাননি। বৃহস্পতিবার নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এই মন্তব্য করেন।

সরকার ও ফ্যাসিবাদবিরোধী প্রত্যাশা

রিজভী বলেন, রক্তাক্ত আন্দোলনের মাধ্যমে গঠিত অন্তর্বর্তী সরকারের কাছ থেকে জনগণ যে গণতান্ত্রিক সংস্কার প্রত্যাশা করেছিল, তার প্রতিফলন এখনো দেখা যাচ্ছে না। তিনি অভিযোগ করেন, পতিত স্বৈরাচারের দোসররা আদালতে এসে বিচারকের প্রতি অবজ্ঞাসূচক আচরণ করছে এবং আদালতকে অকার্যকর প্রমাণের ষড়যন্ত্র করছে।

আওয়ামী লীগের পলাতক নেতাদের বিরুদ্ধে ক্ষোভ

রিজভী দাবি করেন, ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর তাদের নেতারা ভারতে পালিয়ে গেছেন। শেখ হাসিনার প্রচুর পাচারকৃত অর্থের মাধ্যমে ‘খুনি বাহিনী ও ভাড়াটে’ লোক দিয়ে দেশে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি করা হচ্ছে। সেই টাকা দিয়ে ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের চেষ্টা চলছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

প্রশাসনে ‘সর্ষের ভিতর ভূত’ থাকার অভিযোগ

তিনি বলেন, দীর্ঘ সময় ধরে পুলিশের সহায়তায় বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের হয়রানি করা হলেও বর্তমানে অপরাধী আওয়ামী নেতাদের বিশেষ সুবিধা দেওয়া হচ্ছে। পুলিশ প্রশাসনের মধ্যে এখনো হাসিনার দোসররা সক্রিয় রয়েছে বলে দাবি করেন তিনি।

বিস্ময় প্রকাশ

রিজভী অভিযোগ করেন, কিছু ফ্যাসিস্ট অনুচর প্রকাশ্যে ঝটিকা মিছিল করছে এবং বিএনপি নেতাকর্মীদের বাড়ি-ঘরে অগ্নিসংযোগ করছে। মানিকগঞ্জ-এ ভাস্কর মানবেন্দ্র ঘোষ-এর বাড়িতে আগুন দেওয়ার ঘটনাও তিনি তুলে ধরেন।

অর্থ পাচার ও সিন্ডিকেট প্রসঙ্গ

তিনি দাবি করেন, শেখ হাসিনার সমর্থনে ফ্যাসিবাদকে প্রলম্বিত করতে সহযোগিতা করা ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের কেউ এখনো বিচারের আওতায় আসেনি। একইসঙ্গে বলেন, দুঃশাসনের সময় ২৮ লক্ষ কোটি টাকা পাচার হয়েছে, কিন্তু সেই অর্থ সংশ্লিষ্টরা এখনো বহাল তবিয়তে রয়েছেন।

মূল্যস্ফীতি ও দুর্নীতির অভিযোগ

রিজভীর অভিযোগ, প্রশাসনের সর্বস্তরে দুর্নীতি ও সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম্য বাড়ছে। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে। এর জন্য তিনি মাফিয়া অর্থনীতি ও ফ্যাসিবাদী সিন্ডিকেটকে দায়ী করেন।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আব্দুস সালাম, যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন নবী খান সোহেল, নেতা মীর সরাফত আলী সপু, হাবিবুর রহমান হাবিব, জাহিদুল ইসলাম জাহিদ এবং ছাত্রদলের সহ-সভাপতি তৌহিদুর রহমান আউয়াল প্রমুখ।