ভারত ট্রান্সশিপমেন্ট বন্ধ করলেও রপ্তানিতে প্রভাব পড়বে না: বাণিজ্য উপদেষ্টা

ভারতের ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিলের সিদ্ধান্ত বাংলাদেশের রপ্তানিখাতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে না বলে মন্তব্য করেছেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন। বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) রাজধানীর আইসিসিবি-তে আয়োজিত ‘মিট বাংলাদেশ এক্সপোজিশন’-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এ মন্তব্য করেন।

নিজস্ব সক্ষমতা ও বহুমুখীকরণে জোর

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, “দেশের নিজস্ব সক্ষমতার সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত করে রপ্তানির খরচ কমানো হচ্ছে। এতে ব্যবসায়ীদের জন্য আরও প্রতিযোগিতামূলক পরিবেশ তৈরি হবে।” তিনি আরও বলেন, “আমাদের রপ্তানি বহুমুখীকরণ এখন সময়ের দাবি। শুধুমাত্র কয়েকটি নির্দিষ্ট পণ্যের ওপর নির্ভর করে বিশ্ববাজারে টিকে থাকা কঠিন হবে। উদ্ভাবন ও নতুন বাজার অনুসন্ধানে মনোযোগ দিতে হবে।”

তিনি জানান, সরকার ব্যবসা সহজীকরণ ও বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণের জন্য ‘ন্যাশনাল সিঙ্গেল উইন্ডো’ চালুর মতো পদক্ষেপ নিচ্ছে। যেকোনো সমস্যা সমাধানে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোর সঙ্গে আলোচনাও অব্যাহত রয়েছে।

অংশগ্রহণকারী ও অতিথিদের মন্তব্য

অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন ইসিফোরজে প্রকল্পের পরিচালক আবদুর রহিম খান। বক্তব্য রাখেন বিশ্বব্যাংকের ঢাকা কার্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত এ দেশীয় প্রধান সুহাইল কাসিম, বেসরকারি খাত বিষয়ক জ্যেষ্ঠ বিশেষজ্ঞ হোসনা ফেরদৌস, আল নোকবা গ্রুপ-এর সিইও সুলতান এম আলবিশি এবং বিপিজিএমইএ-র সভাপতি শামীম আহমেদ

বিশ্বব্যাংকের প্রতিনিধিত্বকারী সুহাইল কাসিম বলেন, “বাংলাদেশ এলডিসি থেকে উত্তরণের পর বিদেশি সহায়তা কমে যাবে। তাই এখন থেকেই ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পে গুরুত্ব দিতে হবে। একইসঙ্গে প্রযুক্তি ও প্রতিযোগিতা সক্ষমতা বাড়ানোর তাগিদ রয়েছে।”

সম্ভাবনাময় শিল্প ও আন্তর্জাতিক অংশগ্রহণ

বিপিজিএমইএ-র সভাপতি শামীম আহমেদ বলেন, “দেশের জিডিপির ৩০ শতাংশ আসে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প থেকে। প্লাস্টিকসহ অন্যান্য সম্ভাবনাময় শিল্প নিয়ে ভাবতে হবে। প্লাস্টিক শিল্পে বর্তমানে ২০ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হচ্ছে, যা আরও সম্ভাবনার ইঙ্গিত দেয়।”

প্রদর্শনীতে চামড়া, চামড়াজাত পণ্য, ফুটওয়্যার, এমপিপিই, প্লাস্টিক ও হালকা প্রকৌশল খাতের ১২০টির বেশি দেশীয় প্রতিষ্ঠান অংশগ্রহণ করেছে। এই আন্তর্জাতিক আয়োজনে অংশ নিয়েছে সিঙ্গাপুর, লিবিয়া, কলম্বিয়া, আলজেরিয়া, সংযুক্ত আরব আমিরাত, ভারত, ভুটান, মালদ্বীপ ও মালয়েশিয়াসহ নয়টি দেশের ২৫টি আন্তর্জাতিক সোর্সিং এজেন্ট ও ক্রেতা। অংশ নিয়েছেন এক হাজারের বেশি দেশীয় ক্রেতাও।

আয়োজকদের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, বিদেশি সোর্সিং প্রতিনিধিরা প্রদর্শনীতে অংশগ্রহণকারী বিভিন্ন শিল্প কারখানা সরাসরি পরিদর্শন করবেন।