দীর্ঘ আট বছর গুম অবস্থায় থাকা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আব্দুল্লাহিল আমান আযমী (Brigadier General (Retd.) Abdullahil Amaan Azmi) বলেছেন, “১৯৭১ সালে ভারত নিজেদের স্বার্থেই বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে সাহায্য করেছিল।” তিনি বলেন, ভারতীয় আধিপত্যবাদ মুক্তিকামী জনতা আর কখনো মেনে নেবে না।
বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (University of Dhaka) এর সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের মোজাফফর আহমদ চৌধুরী মিলনায়তনে আয়োজিত এক সেমিনারে তিনি এসব কথা বলেন।
সেমিনারের আয়োজন করে বুদ্ধিবৃত্তিক সংগঠন ‘ছত্রিশ’। সেমিনারের শিরোনাম ছিল—“হাসিনার গুম খুনের রাজনীতি : আয়নাঘর প্রকল্প”।
‘ভারতের সহযোগিতা ছিল আধিপত্যের লক্ষ্যেই’ — আযমী
আমান আযমী বলেন, “ভারত পাকিস্তানের গোলামী থেকে মুক্ত করে বাংলাদেশকে নিজেদের গোলামে পরিণত করতে চেয়েছিল। এজন্যই তারা এতদিন শেখ হাসিনা (Sheikh Hasina)কে সমর্থন দিয়েছে। কিন্তু এই দেশে এখন আর ভারতীয় আধিপত্য চলবে না।”
তিনি আরও বলেন, “জুলাই বিপ্লবের মাধ্যমে জনগণ ফ্যাসিবাদী শাসনের অবসান ঘটিয়েছে। এই আন্দোলনই তাকে আট বছরের বন্দিদশা থেকে মুক্ত করেছে।”
ব্যারিস্টার আহমদ বিন কাসেমের ভয়াবহ অভিজ্ঞতা
সেমিনারে উপস্থিত ছিলেন আয়নাঘরের আরেক বন্দি ব্যারিস্টার আহমদ বিন কাসেম (আরমান)। তিনি বলেন, “২০১৬ সালে আমাকে মিরপুরের বাসা থেকে সাদা পোশাকে লোকজন তুলে নিয়ে যায়। এরপর আমাকে আট বছর ধরে একটি নির্জন প্রকোষ্ঠে রাখা হয়। পরিবার জানত না আমি বেঁচে আছি না মরে গেছি।”
আরমান বলেন, “আমার ছোট দুটি মেয়ে আজ স্কুলে যেতে চায় না। তাদের মানসিকভাবে ভেঙে দিয়েছে এই ঘটনা।” তিনি দাবি করেন, যুদ্ধাপরাধের বিচারে সরকারের বেআইনি কার্যক্রমের বিরুদ্ধে সোশ্যাল মিডিয়ায় লেখালেখির কারণেই তাকে গুম করে রাখা হয়েছিল।
অন্যান্য বক্তাদের মন্তব্য
সুপ্রীম কোর্টের আইনজীবী নাজিবুর রহমান মোমেন বলেন, “গত ১৬ বছর ধরে আওয়ামী লীগ সাংস্কৃতিক আগ্রাসনের মাধ্যমে বাংলাদেশের জাতীয় পরিচয়কে বিলীন করতে চেয়েছে। কিন্তু আমরা বাংলাদেশি জাতিসত্তার পক্ষে আছি।”
সেমিনারে আরও বক্তব্য দেন ইউনিভার্সিটি অফ ক্যালিফোর্নিয়ার গবেষক খন্দকার রাকিব এবং সভাপতিত্ব করেন ‘ছত্রিশ’-এর প্রধান উপদেষ্টা এস এম ফরহাদ।