নির্বাচন সামনে রেখে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সংস্কার প্রস্তাব নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে মতপার্থক্য স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। বিএনপি (BNP) বেশ কিছু প্রস্তাবে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে দ্বিমত জানিয়েছে, আবার নতুন দল জাতীয় নাগরিক পার্টি (National-Citizens-Party) অধিকাংশ প্রস্তাবে সহমত প্রকাশ করেছে। অন্যদিকে গণতন্ত্র মঞ্চ ও ১২ দলীয় জোট বিএনপির অবস্থান সমর্থন করছে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, সংস্কারে ঐকমত্যে পৌঁছানো সম্ভব, তবে প্রয়োজন পারস্পরিক আস্থা ও একসঙ্গে চলার মানসিকতা। বিশেষভাবে, বাম গণতান্ত্রিক জোট বিএনপি-র সাথে বৈঠক করেছে ডানপন্থার উত্থানের পরিপ্রেক্ষিতে। ইসলামী দলগুলোর সংস্কারে আগ্রহ কম, তারা মূলত ক্ষমতার ভাগীদারিত্বে আগ্রহী।
সংবিধান সংস্কারের ক্ষেত্রে বিএনপি যেমন দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সংসদের প্রস্তাব সমর্থন করেছে, তেমনি ‘একটানা দু’বারের বেশি প্রধানমন্ত্রী’ হতে না দেয়ার বিষয়ে নিজস্ব শর্ত জুড়েছে। নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের প্রস্তাব অনুযায়ী অভিযুক্ত হলেই নির্বাচন অযোগ্য হওয়ার ব্যাপারে বিএনপি দ্বিমত জানিয়েছে।
জাতীয় নাগরিক পার্টি অনেক প্রগতিশীল প্রস্তাব দিয়েছে, যেমন ১০০ আসনে সরাসরি নারী নির্বাচন, রাষ্ট্রপতি নির্বাচন ইলেক্টোরাল কলেজের মাধ্যমে, ও ভোটাধিকারের বয়স ১৬ বছর করা ইত্যাদি।
তবে রাষ্ট্রের মৌলিক নীতির বিষয়ে বিএনপি ও জাতীয় নাগরিক পার্টি-র অবস্থানে কিছু পার্থক্য রয়েছে, বিশেষ করে ধর্মনিরপেক্ষতা ও রাষ্ট্রধর্ম ইস্যুতে।
রাজনীতিতে বিএনপি ও জাতীয় নাগরিক পার্টি এখন প্রতিদ্বন্দ্বী। এনসিপি-র কিছু নেতা অন্তর্বর্তী সরকারকে সমর্থন করায় বিএনপির মধ্যে নির্বাচন নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। তারা দ্রুত নির্বাচনের তারিখ ঘোষণার দাবি জানিয়েছে।
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেছেন, ফ্যাসিবাদের নিপীড়ন যেন আর না ফেরে। তবে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ন্যূনতম ঐকমত্য প্রতিষ্ঠা ছাড়া তা সম্ভব হবে না বলে তিনি মন্তব্য করেন।