ক্রিকেটার নাসির হোসাইন (Nasir Hossain) ও তার স্ত্রী তামিমা সুলতানা তাম্মি (Tamima Sultana Tammi) এর বিরুদ্ধে অন্যের স্ত্রীকে প্রলুব্ধ করা, ব্যভিচার ও মানহানির অভিযোগে করা মামলায় বিচারক বিব্রত প্রকাশ করে মামলাটি অন্য আদালতে বদলির আদেশ দিয়েছেন।
আদালতে হাজিরা ও ঘটনাপ্রবাহ
সোমবার (২৮ এপ্রিল) ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট ওয়াহিদুজ্জামান (Wahiduzzaman) এর আদালতে আত্মপক্ষ শুনানির দিন ধার্য ছিল। এদিন বেলা ১১টা ৫১ মিনিটের দিকে শুনানি শেষে এজলাস থেকে বেরিয়ে আসেন নাসির ও তামিমা। আদালত প্রাঙ্গণে গণমাধ্যমের ক্যামেরার মুখে পড়লে তারা কালো মাস্ক পরে মুখ ঢাকার চেষ্টা করেন। স্ত্রীকে ঢাল বানিয়ে ক্যামেরার মুখোমুখি হওয়া এড়িয়ে যেতে চেষ্টা করেন নাসির।
কিন্তু মিডিয়ার উপস্থিতি এড়াতে না পেরে তামিমা নাসিরকে বলেন, “এভাবে যাওয়া যায় না, হাঁটব কীভাবে।” পরে দুজন আলাদা পথে এগিয়ে যান—তামিমা সিএমএম আদালতের সিঁড়ি দিয়ে, আর নাসির সিজেএম আদালতের দিকে।
আদালতে উভয় পক্ষের আবেদন
নাসির-তামিমার পক্ষে আজিজুর রহমান দুলু (Azizur Rahman Dulu) দুটি আবেদন করেন। একটিতে বাদীপক্ষের আইনজীবী ইসরাত হাসান (Israt Hasan) এর বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগ আনেন, কারণ তিনি মামলার বিচারাধীন অবস্থায় নাসির সম্পর্কে মিডিয়ায় মন্তব্য করেছেন। অন্য আবেদনে আত্মপক্ষ শুনানির সময় মামলার সারসংক্ষেপ পাঠের আবেদন করা হয়।
অন্যদিকে বাদীপক্ষ আদালতে অভিযোগ করেন, আসামিপক্ষের আইনজীবী আগে বাদীপক্ষে মামলা পরিচালনা করেছেন, যা আইন অনুযায়ী সমর্থনযোগ্য নয়।
মামলার অগ্রগতি
দুই পক্ষের শুনানি শেষে বিচারক বলেন, “এই আদালত অত্যন্ত ব্যস্ত। এত সময় দেওয়া সম্ভব নয়। আমি বিব্রতবোধ করছি, মামলাটি অন্য আদালতে পাঠাচ্ছি।” এরপর মামলাটি চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট বরাবর বদলির আদেশ দেন।
এর আগে, গত ১৬ এপ্রিল মামলায় ১০ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয়। ২০২২ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি একই আদালত নাসির ও তামিমার বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে বিচার শুরুর আদেশ দেন এবং নাসিরের শাশুড়ি সুমি আক্তার (Sumi Akter) কে অব্যাহতি দেওয়া হয়।
মামলার পটভূমি
২০২১ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি ঢাকা (Dhaka) মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে তামিমার সাবেক স্বামী রাকিব হাসান (Rakib Hasan) মামলা দায়ের করেন। অভিযোগে বলা হয়, ২০১১ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি রাকিব ও তামিমার বিয়ে হয় এবং তাদের একটি কন্যাসন্তান রয়েছে। ২০২১ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি তামিমা ও নাসিরের বিবাহের ছবি সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে রাকিব বিষয়টি জানতে পারেন।
রাকিবের অভিযোগ, তার সাথে বৈবাহিক সম্পর্ক চলমান থাকাকালীনই তামিমা নাসিরকে বিয়ে করেছেন, যা ধর্মীয় ও রাষ্ট্রীয় আইনে অবৈধ। এতে রাকিব ও তার কন্যা মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হন এবং রাকিবের মানহানি হয়।