কাশ্মীর (Kashmir) অঞ্চলে হামলার ঘটনার পর ভারতে মুসলমানদের উপর ব্যাপক নির্যাতনের খবর পাওয়া গেছে। ‘বাংলাদেশি’ পরিচয়ে নানা রাজ্যে মুসলিম পরিযায়ী শ্রমিকদের গণহারে আটক ও নির্যাতন করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংবাদমাধ্যম এনপিআর (NPR)।
বিস্ফোরক দিয়ে বাড়ি ধ্বংস, ১৫০০ মুসলমান আটক
প্রতিবেদনে বলা হয়, গত এক সপ্তাহে সন্দেহের বশে কমপক্ষে পাঁচজন মুসলমানের বাড়ি বিস্ফোরক দিয়ে উড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি ‘বাংলাদেশি’ তকমা দিয়ে ভারতজুড়ে ১,৫০০ জন মুসলমানকে আটক করেছে পুলিশ।
গুজরাটে সাড়ে ছয় হাজার সন্দেহভাজন আটক
গুজরাট পুলিশ (Gujarat Police) জানিয়েছে, তারা সাড়ে ছয় হাজার মানুষকে বাংলাদেশি সন্দেহে আটক করেছে, যার মধ্যে ৪৫০ জনের প্রকৃত বাংলাদেশি পরিচয় পাওয়া গেছে।
পরিযায়ী শ্রমিকদের সহায়তায় হেল্পলাইন
পরিযায়ী শ্রমিক ঐক্য মঞ্চ (Parijayi Shramik Oikya Mancha) নামে একটি সংগঠন জানিয়েছে, গুজরাটে ধরপাকড় শুরু হওয়ার পর তারা হেল্পলাইন চালু করেছে। সংগঠনের রাজ্য সম্পাদক আসিফ ফারুক (Asif Faruq) জানান, প্রিয়জন নিখোঁজ হওয়ার বিষয়ে গত দুই দিনে শতাধিক অভিযোগ জমা পড়েছে।
তিনি বলেন, গুজরাটের মতোই উত্তরপ্রদেশ (Uttar Pradesh), ওড়িশা (Odisha) এবং মহারাষ্ট্র (Maharashtra) রাজ্যেও পশ্চিমবঙ্গ (West Bengal) থেকে যাওয়া বাংলাভাষী মুসলমানদের ‘বাংলাদেশি’ আখ্যা দিয়ে হেনস্তা করা হচ্ছে।
নির্যাতনের বাস্তব উদাহরণ
১৮ এপ্রিল, পশ্চিমবঙ্গের মালদা (Malda) জেলার ২৩ জন ফেরিওয়ালাকে উত্তরপ্রদেশের কুশিনগরে (Kushinagar) বাংলায় কথা বলার জন্য মারধর করে স্থানীয়রা এবং পরে পুলিশ তাদের হেফাজতে নেয়। একদিন পর তারা মুক্তি পান।
২১ এপ্রিল, মুর্শিদাবাদ (Murshidabad) থেকে ৬০ জন শ্রমিক ওড়িশার কেওনঝড় (Keonjhar, Odisha) যাওয়ার পথে জসিপুর (Josipur) এলাকায় হেনস্তার শিকার হন। পরে তারা নিজ জেলায় ফিরে আসেন।
সাংবিধানিক অধিকার প্রশ্নবিদ্ধ
আসিফ ফারুক বলেন, “ভারতের নাগরিক হিসেবে বাংলাভাষী মুসলমানদের কি দেশের যেকোনো প্রান্তে কাজ বা ব্যবসা করার অধিকার নেই?”—এই প্রশ্ন এখন জোরালোভাবে উঠছে। এ নিয়ে সংগঠনটি ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ (Amit Shah)কে চিঠি লিখলেও কোনো কার্যকর পদক্ষেপ চোখে পড়ছে না।