আলোচিত ইসলামিক বক্তা ও আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশনের (As-Sunnah Foundation) চেয়ারম্যান শায়খ আহমাদুল্লাহ (Sheikh Ahmadullah) ফেসবুক পোস্টে মন্তব্য করেছেন, “পশ্চিমারা যে চোরাবালি থেকে ওঠার চেষ্টা করছে, আমরা সেই চোরাবালিতে ডোবার চেষ্টা করছি।”
ফেসবুক পোস্টে উদ্বেগ প্রকাশ
মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে দেওয়া এক পোস্টে তিনি বলেন, সন্তান জন্মদানের বিষয়ে পশ্চিমারা এখন নীতিমালা বদলে প্রণোদনার মাধ্যমে জন্মহার বাড়াতে চেষ্টা করছে, কিন্তু বাংলাদেশে উল্টো দিকেই হাঁটা হচ্ছে।
তিনি উল্লেখ করেন, “সম্প্রতি ডোনাল্ড ট্রাম্প (Donald Trump) ছয় সন্তানের মায়েদের জাতীয় মেডেল দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন, যা আমাদের চিন্তায় নতুন মাত্রা যোগ করে।”
সন্তান জন্মে প্রণোদনার আন্তর্জাতিক উদাহরণ
শায়খ আহমাদুল্লাহ বিভিন্ন দেশের উদাহরণ টেনে দেখিয়েছেন কীভাবে সরকারগুলো জন্মহার বৃদ্ধিতে কাজ করছে:
– জাপান প্রথম সন্তানের জন্য ১,২৫,২৫৭ ইয়েন, তৃতীয়-চতুর্থ সন্তানে ৫ লাখ ইয়েনের বেশি।
– রাশিয়া: প্রথম সন্তানে ৬৯০,০০০ রুবল, দ্বিতীয় সন্তানে অতিরিক্ত ২ লাখ রুবলের বেশি।
– জার্মানি: সন্তানের জন্য মাসিক ২৫০ ইউরো, বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত।
– চীন: এক সন্তান নীতি বাতিল করে এখন তিন সন্তান পর্যন্ত অনুমতি ও উৎসাহ।
– দক্ষিণ কোরিয়া: ২০২৫-২৬ অর্থবছরে ৬.৭ ট্রিলিয়ন ওনের প্রণোদনা।
– ফ্রান্স: সন্তান জন্মের আগেই ১,০০০ ইউরো; পরবর্তীতে প্রতি সন্তান ও মাকে মাসিক ভাতা।
– যুক্তরাষ্ট্র:** জাতীয় মেডেল ও প্রতিটি নতুন মায়ের জন্য ৫,০০০ ডলারের প্রস্তাব।
বাংলাদেশের বিপরীত দৃষ্টিভঙ্গি
তিনি দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, “আমরা উল্টো স্লোগান দিচ্ছি: ‘দুটি সন্তানের বেশি নয়, একটি হলে ভালো হয়।’ যেখানে পশ্চিমারা সন্তান জন্মে মরিয়া, আমরা সেখানে সন্তান জন্ম নিরুৎসাহিত করছি।”
বিবাহ ও সমাজব্যবস্থার সংকট
তিনি বলেন, সমতার নামে নারীকে উপার্জনে বাধ্য করা, অবাধ যৌনাচার ও দুর্বল পারিবারিক সম্পর্ক জন্মহারের হ্রাসের প্রধান কারণ। “পরিবারই যদি না থাকে, তবে লাখ টাকার পুরস্কারেও জন্মহার বাড়ানো সম্ভব নয়।”
তিনি আরও বলেন, “যেখানে পশ্চিমারা ব্যর্থ নীতির অভিশাপ থেকে ফিরে আসার চেষ্টা করছে, আমরা সেখানে নিজেদের ছুঁড়ে দিচ্ছি। বিবাহ কঠিন করে তোলা আর ব্যভিচার সহজ করে ফেলা আমাদের সমাজে ভয়ংকর পরিণতির দিকে নিয়ে যাচ্ছে।”
শেষ হুঁশিয়ারি
পোস্টের শেষাংশে তিনি লেখেন, “পতঙ্গ যখন মৃত্যু ঘনিয়ে আসে, আগুনকে চাঁদের আলো ভেবে আত্মাহুতি দেয়। আমাদের সমাজও সেই পথেই হাঁটছে।”