প্রবাসী বাংলাদেশিদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করতে নির্বাচন কমিশন (Election Commission) প্রক্সি ভোট পদ্ধতি চালুর ভাবনা নিয়ে রাজনৈতিক দল, সুশীল সমাজ, গণমাধ্যম ও বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে মতবিনিময় করেছে। মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) অনুষ্ঠিত এই সভায় বেশিরভাগ রাজনৈতিক দল প্রক্সি ভোটে জালিয়াতির ঝুঁকি ও আস্থার সংকটের কথা তুলে ধরে এটি চূড়ান্ত প্রক্রিয়া হিসেবে গ্রহণ না করার পরামর্শ দেয়।
রাজনৈতিক দলগুলোর অবস্থান
সভায় বিএনপি (BNP), জামায়াতে ইসলামি (Jamaat-e-Islami), জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) (National Citizens’ Party – NCP), গণঅধিকার পরিষদ, এবি পার্টি, সিপিবি, বাংলাদেশ মুসলিম লীগ, নাগরিক ঐক্য সহ ২১টি দলের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
বিএনপি নেতা নজরুল ইসলাম খান জানান, তারা প্রবাসীদের ভোটের পক্ষে থাকলেও বিস্তারিত মতামত দলের ফোরামে আলোচনা করে জানাবেন।
এনসিপি‘র খালেদ সাইফুল্লাহ বলেন, “প্রক্সি হলে কোথাও বেশি ভোট আসতে পারে, এটা থ্রেট হতে পারে।”
জামায়াত‘র মতিউর রহমান আকন্দ বলেন, “১৫ বছরে ইসির প্রতি মানুষের আস্থা হারিয়েছে। ভোটার এক, প্রক্সি অন্য হলে সঠিক প্রতিফলন হবে না।”
গণঅধিকার পরিষদ‘র রাশেদ খান ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা তুলে ধরে ভোট নিরাপত্তার প্রশ্ন তোলেন।
এবি পার্টি‘র আব্বাস ইসলাম খান বলেন, “এনআইডির ডেটা নিরাপদ না। তাই ট্রাস্ট আনতে হবে।”
সিপিবি‘র কাজী সাজ্জাদ জহির চন্দন বলেন, “আলোচনার মাধ্যমে সব দিক বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত।”
বাংলাদেশ মুসলিম লীগ‘র আকবর হোসেন পাঠান বলেন, “প্রবাসীদের ভোটের আগে দেশের ভোট সুষ্ঠু করা দরকার।”
নাগরিক ঐক্য‘র সাকিব আনোয়ার বলেন, “তাড়াহুড়ো না করে আস্থা ফিরিয়ে আনাই জরুরি।”
মতবিনিময়ে আলোচ্য বিষয়
অনেকেই বলেন, প্রক্সি ভোটে ভোটারের আসল রায় প্রতিফলিত নাও হতে পারে। অনলাইন ও পোস্টাল ব্যালটেও নিরাপত্তা ও ট্রাস্ট গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। অনিবন্ধিত দলের মধ্যেও অনেকেই সতর্কতা অবলম্বনের পক্ষে মত দেন।
প্রেক্ষাপট ও কারিগরি প্রস্তুতি
এর আগে ৮ এপ্রিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, বুয়েট, এমআইএসটি, সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়, ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের অংশগ্রহণে কর্মশালা হয়। পরে এই তিন প্রতিষ্ঠান নিয়ে একটি পরামর্শক কমিটি গঠন করা হয়, যারা তিনটি ভোটিং পদ্ধতির ওপর তিনটি প্রতিবেদন তৈরি করে।