রাখাইন রাজ্যে মিয়ানমারের জন্য মানবিক করিডোর গঠনের সম্ভাব্য সিদ্ধান্ত নিয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে বিএনপি (BNP)। দলটির দাবি, একটি অনির্বাচিত সরকারের এ ধরনের গুরুত্বপূর্ণ ও স্পর্শকাতর সিদ্ধান্ত গ্রহণের কোনো এখতিয়ার নেই।
বিএনপির প্রতিক্রিয়া
সোমবার রাতে গুলশানে দলীয় চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত জাতীয় স্থায়ী কমিটি (National Standing Committee)র বৈঠকে ভার্চুয়ালি সভাপতিত্ব করেন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। বৈঠকে নেতারা জানান, সরকার রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা ছাড়াই রাখাইনে করিডোর স্থাপনের বিষয়ে এগিয়ে যাচ্ছে, যা দেশের জন্য ভবিষ্যতে হুমকি হতে পারে।
স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন (Dr. Khandaker Mosharraf Hossain) বলেন, “পত্রপত্রিকায় দেখেছি, সরকার একতরফাভাবে দেশের জনগণের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা না করে এমন গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। শর্ত আছে বলছে, কিন্তু শর্তগুলো কী, সেটাও আমরা জানি না।”
সরকারের ব্যাখ্যা
সরকারের পক্ষ থেকে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম (Shafiqul Alam) বলেন, “জাতিসংঘের নেতৃত্বে রাখাইনে মানবিক সহায়তা পাঠানো হলে বাংলাদেশ লজিস্টিক সহায়তা দিতে প্রস্তুত। যদিও এখনো সিদ্ধান্ত হয়নি, তবে পরামর্শক্রমে সিদ্ধান্ত হবে।”
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন (Touhid Hossain) বলেন, “আমরা নীতিগতভাবে সম্মত, কারণ এটি একটি মানবিক সহায়তা সরবরাহের পথ হবে। কিছু শর্ত রয়েছে, সেগুলো পূরণ হলে জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে আমরা সহযোগিতা করব।”
অন্যান্য রাজনৈতিক দলের প্রতিক্রিয়া
- হেফাজতে ইসলাম (Hefazat-e-Islam) করিডোর পরিকল্পনার প্রতিবাদ জানিয়ে বলে, এটি সার্বভৌমত্বের জন্য হুমকি। মামুনুল হক (Mamunul Haque) বলেন, “সাম্রাজ্যবাদী শক্তির এজেন্ডা বাস্তবায়নে বাংলাদেশকে ব্যবহার করা হচ্ছে।”
- ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ (Islami Andolon Bangladesh) এর আমির মুফতি রেজাউল করীম (Rezaul Karim) বলেন, রাজনৈতিক ঐকমত্য ছাড়া এমন সিদ্ধান্ত অযৌক্তিক।
- সিপিবি (CPB) বলেছে, এই পদক্ষেপ স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বকে হুমকির মুখে ফেলবে।
- বাসদ (BASAD) বিবৃতিতে বলেছে, “এটি জাতিকে নিয়ে পাশা খেলার শামিল।”
- গণসংহতি আন্দোলন (Gonoshonghoti Andolon) এর পক্ষ থেকে জানানো হয়, “জাতীয় ঐকমত্য ছাড়া এ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা যাবে না।”
বিএনপির ভবিষ্যৎ পদক্ষেপ
বিএনপি জানিয়েছে, এই ইস্যুতে তারা মিত্র দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করবে এবং প্রয়োজনীয় তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহের পর সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে জাতির সামনে তাদের অবস্থান তুলে ধরবে।