শ্রমজীবী মানুষ এখনো দুঃখ-কষ্টে দিন কাটাচ্ছে: মে দিবসে বার্তায় তারেক রহমান

আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস উপলক্ষে দেওয়া এক বার্তায় বিএনপি (BNP)র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান (Tarique Rahman) বলেছেন, “দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি ও মূল্যস্ফীতির চাপে শ্রমজীবী মানুষ এখনো দুঃখ-কষ্টে জীবন যাপন করছে।” তিনি বলেন, গত বছর গণ-অভ্যুত্থানে ছাত্র ও শ্রমিকদের আত্মত্যাগে আওয়ামী লীগ (Awami League) সরকারের পতন ঘটলেও, এখনো শ্রমিকরা অধিকারবঞ্চিত ও অবহেলিত।

“আদর্শ গণতন্ত্রেই শ্রমিকের মর্যাদা নিশ্চিত সম্ভব”

তারেক রহমান বলেন, “শ্রমিকের ন্যায্য অধিকার বাস্তবায়নে কোনো প্রতিবন্ধকতা থাকার কথা নয়, তবুও শ্রমজীবীরা অধিকার বঞ্চিত।” তিনি মনে করেন, “দেশে উৎকৃষ্ট গণতন্ত্রের সমাজভূমি গড়ে উঠলেই শ্রমজীবী মানুষের মর্যাদা প্রতিষ্ঠা সম্ভব হবে।”

মে দিবস উপলক্ষে দেওয়া বার্তায় তিনি দেশ-বিদেশে কর্মরত সব শ্রমজীবী মানুষকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও সংগ্রামী সালাম জানান। পাশাপাশি ১৮৮৬ সালের ‘হে মার্কেট’-এর শহীদ শ্রমিকদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানান, যারা আট ঘণ্টা কর্মদিবসসহ ন্যায্য অধিকার আদায়ে আত্মত্যাগ করেছিলেন।

‘শ্রমিকদের হাত উন্নয়নের চাবিকাঠি’—জিয়াউর রহমানের দর্শন

তারেক রহমান বলেন, সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান (Ziaur Rahman) নিজেকে সবসময় একজন শ্রমিক মনে করতেন এবং বলতেন—শ্রমিকের দুটি হাতই দেশের উন্নয়নের চাবিকাঠি। বিএনপি ক্ষমতায় থাকাকালীন শ্রমিকদের কল্যাণে নেওয়া উদ্যোগগুলোর কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন:

  • শ্রম আইন সংস্কার ও আধুনিকীকরণ
  • বেতন ও মজুরি কমিশন গঠন
  • গার্মেন্টস শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি নির্ধারণ ও বোনাস ব্যবস্থা
  • শ্রমিক কল্যাণ ফাউন্ডেশন গঠন
  • শ্রমিক সন্তানদের চিকিৎসা ও শিক্ষা সহায়তা

তিনি বলেন, “বিশেষ করে পোশাক খাতে শ্রমিকদের জন্য গৃহীত পদক্ষেপগুলো দেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতিতে অবদান রেখেছে এবং ভবিষ্যতেও বিএনপি ক্ষমতায় এলে খেটে খাওয়া মানুষের কল্যাণে কাজ করবে।”

‘দুঃশাসনের প্রকোপে শ্রমিক শ্রেণি সবচেয়ে নিপীড়িত ছিল’

তারেক রহমান বলেন, “দীর্ঘ ফ্যাসিবাদী শাসনের সময় শ্রমিক শ্রেণি ছিল সবচেয়ে নিপীড়িত। তবে গণ-অভ্যুত্থানে ছাত্র ও শ্রমিকদের আত্মদানে সেই শাসনের পতন হয়।” তিনি বলেন, “এখনো শ্রমিকদের ন্যায্য অধিকার আদায়ে আমরা পিছিয়ে। এই মে দিবসে আমাদের প্রতিজ্ঞা হোক—শোষণমুক্ত সমাজ গড়ে তোলা।”

তিনি আন্তর্জাতিক শ্রমিক আন্দোলনের প্রতি সংহতি জানিয়ে বলেন, “এই দিবসে শুধু বাংলাদেশ নয়, বিশ্বজুড়ে শ্রমিকের অধিকার প্রতিষ্ঠায় শপথ নিতে হবে।”

বার্তার শেষাংশে তিনি মে দিবসের সব কর্মসূচির সফলতা কামনা করে দেশবাসীর শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনা করেন এবং বলেন, “আল্লাহ হাফেজ, বাংলাদেশ জিন্দাবাদ।”