গণতন্ত্রের ‘আর্লি স্টেজ’ বিবেচনায় একজন ব্যক্তি একসঙ্গে সরকারপ্রধান, সংসদ নেতা ও দলের প্রধান হতে পারেন বলে মত দিয়েছেন ইশরাক হোসেন (Ishraq Hossain)। তবে তিনি এটাও স্পষ্ট করেছেন যে, এটি যোগ্যতার অভাব নয় বরং গণতান্ত্রিক কাঠামোর বাস্তবতা।
নেতৃত্বের কেন্দ্রীকরণ ও গণতন্ত্রের বাস্তবতা
সম্প্রতি একটি বেসরকারি টেলিভিশনের টকশোতে অংশ নিয়ে বিএনপি (BNP) নেতা ইশরাক বলেন, “গণতন্ত্রের আর্লি স্টেজে একজন ব্যক্তি সরকারপ্রধান, সংসদ নেতা ও দলের প্রধান—এই তিনটি দায়িত্ব একসঙ্গে পালন করতে পারেন। না হলে কনফ্লিক্ট ও বিশৃঙ্খলার আশঙ্কা থাকে।”
উপস্থাপক যখন প্রশ্ন করেন, এতে কি বোঝা যায় যে দলে যোগ্য লোকের অভাব রয়েছে? তখন ইশরাক বলেন, “এই ধারণা ভুল। বরং, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল প্রথম দল যারা পরপর দুইবারের বেশি প্রধানমন্ত্রী না হওয়ার বিধান প্রস্তাব করেছে। এটাই প্রমাণ করে দলটি পরিবর্তনের পথে এগোচ্ছে।”
প্রধানমন্ত্রী পদে সীমাবদ্ধতা ও সংবিধান সংস্কারের আহ্বান
ইশরাক বলেন, “পরপর দুইবারের বেশি প্রধানমন্ত্রী হওয়ার সুযোগ না দেওয়ার সিদ্ধান্ত বিএনপি থেকেই এসেছে। এখন আলোচনায় এসেছে, গ্যাপ দিয়ে তৃতীয়বার হওয়া যাবে কি না। এই বিষয়েও আলোচনা চলছে এবং জাতি শেষ পর্যন্ত একটি ঐক্যমতে পৌঁছাবে বলে আমি বিশ্বাস করি।”
তিনি উল্লেখ করেন, “ঐক্যমত্য কমিশন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনায় বসেছে এবং এটি একটি ইতিবাচক ধারা।”
একমত না হওয়া গণতন্ত্রের সৌন্দর্য
আলোচনার একপর্যায়ে উপস্থাপক আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী (Amir Khasru Mahmud Chowdhury)-এর একটি মন্তব্য তুলে ধরেন, যেখানে তিনি বলেন, সবাইকে সব বিষয়ে একমত হতে হবে—এই চিন্তাধারা ‘বাকশালী’।
এ বিষয়ে ইশরাক হোসেন বলেন, “একমত না হওয়াই গণতন্ত্রের সৌন্দর্য। মতপার্থক্য থাকবে বলেই গণতন্ত্র টিকে থাকে। সবাই যদি একমত হতো, তাহলে তো এক ব্যক্তি, এক দল, এক রাষ্ট্র—এটাই হতো। এটা তো বাকশালের মতো হয়ে যেত।”
তিনি আরও বলেন, “গণতন্ত্রে বিভিন্ন মতের মানুষ একসঙ্গে বসবাস করে, এবং সংখ্যাগরিষ্ঠ মতামতের ভিত্তিতে রাষ্ট্র পরিচালিত হয়। এই ভিন্নমতই একটি উদার গণতান্ত্রিক সমাজের ভিত্তি।”