এপ্রিল মাসে ড. ইউনূসকে নিয়ে সবচেয়ে বেশি অপতথ্য ছড়িয়েছে: রিউমর স্ক্যানার

বাংলাদেশে ফ্যাক্টচেকিং সংস্থা রিউমর স্ক্যানার (Rumor Scanner) জানিয়েছে, ২০২৫ সালের এপ্রিল মাসে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস (Muhammad Yunus)–কে নিয়ে ২৯টি ভুল তথ্য অনলাইনে ছড়ানো হয়েছে, যা চলতি বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। এর মধ্যে প্রায় ৮৩ শতাংশ অপতথ্যে তাকে নেতিবাচকভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে।

অপতথ্যের শীর্ষে ড. ইউনূস

প্রতিবেদনে বলা হয়, এপ্রিল মাসে ছড়ানো ২৯৬টি ভুল তথ্যের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ২৯টি ছিল ড. ইউনূসকে ঘিরে। এরপরে অন্তর্বর্তী সরকারের অন্যান্য উপদেষ্টাদের নামেও অপতথ্য ছড়িয়েছে। এদের মধ্যে ড. আসিফ নজরুল (Asif Nazrul), আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া (Asif Mahmud Sajib Bhuiyan), সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান (Syeda Rizwana Hasan), আ ফ ম খালিদ হোসেন (A.F.M. Khalid Hossain), শেখ বশিরউদ্দীন (Sheikh Bashir Uddin), এবং প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলমকে নিয়েও বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়ানো হয়েছে।

ভুল তথ্যের ধরন ও উৎস

রিউমর স্ক্যানারের বিশ্লেষণে উঠে আসে, এপ্রিল মাসে ছড়িয়ে পড়া ২৯৬টি ভুল তথ্যের মধ্যে:
জাতীয় ইস্যুতে: ১০১টি (৩৪%)
রাজনৈতিক বিষয়ে: ৯৫টি
আন্তর্জাতিক: ৩৮টি
ধর্মীয়: ২৭টি
বিনোদন ও সাহিত্য: ৮টি
শিক্ষা: ৭টি
প্রতারণা: ১০টি
খেলাধুলা: ৯টি

এই ভুল তথ্যগুলোর মধ্যে ১৩৮টি তথ্যকেন্দ্রিক, ১০৫টি ভিডিওকেন্দ্রিক এবং ৫৩টি ছবিকেন্দ্রিক ছিল। ভুল তথ্যগুলোর মধ্যে ১৮০টি মিথ্যা, ৬৬টি বিভ্রান্তিকর, ৪৮টি বিকৃত এবং ২টি ছিল স্যাটায়ারের রূপে প্রচারিত যা বাস্তব দাবি হিসেবে উপস্থাপন করা হয়েছিল।

কোন প্ল্যাটফর্মে সবচেয়ে বেশি ভুল তথ্য

প্রতিবেদনে বলা হয়, ভুল তথ্য প্রচারের জন্য সর্বোচ্চ ব্যবহার হয়েছে ফেসবুক পেইজ—মাত্র এক মাসে ২৭৬টি ভুল তথ্য ছড়ানো হয় ফেসবুকে। অন্য প্ল্যাটফর্মগুলোর মধ্যে ছিল:
ইউটিউব: ৫৪টি
ইনস্টাগ্রাম: ৪৮টি
এক্স (সাবেক টুইটার): ৪৪টি
টিকটক: ২৪টি
থ্রেডস: ১৩টি

এছাড়া বাংলাদেশের গণমাধ্যমও বাদ যায়নি। অন্তত ১৪টি ঘটনায় একাধিক জাতীয় গণমাধ্যমে ভুল তথ্য প্রচারের প্রমাণ পেয়েছে রিউমর স্ক্যানার।

ভারতীয় উৎস থেকেও অপতথ্য

রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধান অনুযায়ী, গত বছর থেকে ভারতীয় গণমাধ্যম এবং ভারত থেকে পরিচালিত কিছু সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্ট থেকে বাংলাদেশকে কেন্দ্র করে অপতথ্য প্রচারের প্রবণতা বেড়েছে। এতে সামাজিক বিভ্রান্তি ও রাজনৈতিক উত্তেজনা বৃদ্ধির আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।