রাখাইনের সহিংসতায় বাংলাদেশে নতুন করে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ, প্রতিদিন ঢুকছে শত শত মানুষ

মিয়ানমার (Myanmar) এর রাখাইন রাজ্যে আরাকান আর্মি (Arakan Army)-র দখল ও সহিংস নির্যাতনের কারণে নতুন করে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের বাংলাদেশে প্রবেশ শুরু হয়েছে। কক্সবাজারের উখিয়া (Ukhia) উপজেলার বালুখালী ক্যাম্প (Balukhali Camp)-এ আশ্রয় নিচ্ছেন অনেকেই।

শরণার্থীদের বর্ণনায় ভয়ঙ্কর নির্যাতন

শরণার্থীদের একজন, মোহাম্মদ আলী জানান, এপ্রিল মাসে পরিবারসহ পালিয়ে আসেন তিনি। তাদের দাবি, আরাকান আর্মির নির্যাতন মিয়ানমার সেনাবাহিনী এর চেয়েও বেশি ভয়ঙ্কর। নতুন আসা রোহিঙ্গারা অভিযোগ করেন, তরুণ-তরুণীদের জোর করে নির্মাণ কাজে ব্যবহার করছে এই গোষ্ঠী, জ্বালিয়ে দিচ্ছে রোহিঙ্গাদের ঘরবাড়ি এবং ছড়াচ্ছে চরম আতঙ্ক।

প্রতিদিন ঢুকছে প্রায় ৫০০ রোহিঙ্গা

স্থানীয় রোহিঙ্গা নেতাদের তথ্য অনুযায়ী, প্রতিদিন গড়ে প্রায় ৫০০ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে প্রবেশ করছেন। ২০২৩ সালের নভেম্বর থেকে এ পর্যন্ত আনুমানিক ১ লাখ ১৩ হাজার রোহিঙ্গা বাংলাদেশে এসেছে, যার বেশিরভাগই এসেছে মে ও জুন মাসে। জায়গার সংকটে ক্যাম্পগুলোতে গাদাগাদি করে বসবাসের ব্যবস্থা করা হচ্ছে।

চোরাচালান ও নিরাপত্তা হুমকি

আরাকান আর্মি রোহিঙ্গাদের ব্যবহার করছে মাদক ও পণ্য চোরাচালানে, এমন অভিযোগ উঠেছে। এ নিয়ে বিজিবি (BGB) জানিয়েছে, তারা সীমান্তে পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ বজায় রেখেছে এবং চোরাচালান ও মাদক সিন্ডিকেট দমনে কড়া পদক্ষেপ নিচ্ছে।

মানবিক সংকট ও আন্তর্জাতিক সহায়তার দাবি

প্রতিনিয়ত শরণার্থী প্রবেশের কারণে প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া আরও অনিশ্চিত হয়ে পড়ছে। একই সঙ্গে খাদ্য, আবাসন ও নিরাপত্তা ব্যবস্থায়ও বাড়তি চাপ পড়ছে। টেকনাফ (Teknaf) সীমান্ত থেকে এখনও দেখা যায়, মিয়ানমারের ভেতরে রোহিঙ্গা বসতিতে অগ্নিসংযোগ চলছে। এই পরিস্থিতিতে আন্তর্জাতিক সহায়তা এবং একটি সমন্বিত উদ্যোগের প্রয়োজনীয়তা আরও স্পষ্ট হয়ে উঠছে।