ঝিনাইদহ (Jhenaidah) জেলার শৈলকূপা (Shailkupa) উপজেলায় বিয়ের প্রলোভনে ধর্ষণ ও জোরপূর্বক গর্ভপাতের অভিযোগ উঠেছে উপজেলা কৃষকদল (Krishak Dal) নেতার ছেলে নাজমুল খন্দকার (Nazmul Khandakar) এর বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় তার বাবা কৃষকদল নেতা কামরুল ইসলাম (Kamrul Islam) সহ চারজনের নামে মামলা হয়েছে।
আদালতে মামলা, থানায় প্রাথমিক তদন্তে অভিযোগের সত্যতা
ভুক্তভোগী নারী ঝিনাইদহ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল (Jhenaidah Women and Children Repression Prevention Tribunal)-এ ধর্ষণ, গর্ভপাত ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে মামলা করেছেন। পাশাপাশি তিনি শৈলকূপা থানা (Shailkupa Police Station)-তেও পৃথক অভিযোগ দাখিল করেন। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই সম্রাট মন্ডল জানান, “অভিযোগের প্রেক্ষিতে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়েছে এবং প্রাথমিকভাবে অভিযোগের সত্যতা মিলেছে।”
দুই বছরের প্রেম, গর্ভধারণ ও গর্ভপাত
ভুক্তভোগীর অভিযোগ, দুই বছর ধরে তার সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলেন নাজমুল খন্দকার, যিনি শৈলকূপা উপজেলা কৃষকদলের সদস্য সচিব কামরুল ইসলামের ছেলে। বিয়ের আশ্বাস দিয়ে নাজমুল তার সঙ্গে নিয়মিত শারীরিক সম্পর্কে লিপ্ত হন। নাজমুলের পরিবারের সদস্যরা বিষয়টি জানলেও শুরুতে তারা সম্পর্ক মেনে নেন এবং ওই নারী নিয়মিত তাদের বাড়িতে যাতায়াত করতেন।
গর্ভবতী হয়ে পড়লে নাজমুল ও তার পরিবার ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে এবং কৌশলে ওই নারীকে ঝিনাইদহ শহরের হামদহ এলাকার রয়েল ক্লিনিকে ভর্তি করে জোরপূর্বক গর্ভপাত করান। এরপর চিকিৎসা শেষ হওয়ার আগেই তাকে ফেলে রেখে হাসপাতাল থেকে চলে যান নাজমুল ও তার পরিবার।
থানায় মামলা না নিয়ে প্রভাব খাটানোর অভিযোগ
ভুক্তভোগীর অভিযোগ, থানায় মামলা দায়ের করতে গেলে প্রথমে তা গ্রহণ করা হয়নি। তিনি দাবি করেন, কৃষকদল নেতা কামরুল ইসলাম রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে তাকে ভয়ভীতি দেখিয়ে মামলা থেকে বিরত রাখার চেষ্টা করেন।
অভিযুক্তদের বক্তব্য
অভিযুক্ত নাজমুল খন্দকার বলেন, “ওই নারীর অভিযোগ সত্য নয়, সে একজন প্রতারক।” তার বাবা কামরুল ইসলাম বলেন, “ওই নারী আমার বাড়িতে আসতেন ঠিকই, তবে গর্ভপাত বা হাসপাতালে ভর্তির বিষয়ে আমি কিছু জানি না।” তিনি প্রতিবেদককে বিষয়টি নিয়ে সংবাদ না করতে অনুরোধ করেন।
পুলিশ ও আদালতের পদক্ষেপ
শৈলকূপা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাসুম খান বলেন, “নারীকে বিয়ের আশ্বাস দিয়ে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন ও নির্যাতনের অভিযোগে আদালতের নির্দেশে থানায় মামলা রেকর্ড করা হয়েছে। আসামি গ্রেফতারে অভিযান চলছে।”