‘ফেরেশতা এলেও কয়েক মাসে দেশটা ঠিক করতে পারবে না’—শারমীন এস মুরশিদের মন্তব্য

অন্তর্বর্তী সরকারের সমাজকল্যাণ উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ (Sharmin S Murshid) বলেছেন, “যে দেশটা হাতে পেয়েছি, ফেরেশতা এলেও সেটা কয়েক মাসে ঠিক করতে পারবে না।” শনিবার ‘পিএফএস পলিউশিন অ্যান্ড পাবলিক হেলথ ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক আলোচনাসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

দুর্নীতি ও অব্যবস্থাপনা বড় চ্যালেঞ্জ

শারমীন মুরশিদ বলেন, “বাংলাদেশ (Bangladesh) দরিদ্র দেশ নয়, বরং অব্যবস্থাপনা ও দুর্নীতিগ্রস্ত দেশ।” দেশের অগাধ সম্পদ থাকার পরও সেগুলোকে কাজে লাগাতে না পারাকে বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে উল্লেখ করেন তিনি।

জুলাই আন্দোলনের ক্ষয়ক্ষতি স্মরণ

আলোচনায় উপদেষ্টা বলেন, “জুলাই আন্দোলনে ৩০ হাজার মানুষ পঙ্গু ও ১৫০০ জন নিহত হয়েছে। এটাকে কোনোভাবেই মুছে ফেলা যাবে না।” তিনি রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, “আপনারা সংস্কার করুন, তারপর আমাদের পাশে এসে দাঁড়ান।”

সঠিক নীতিমালা তৈরির মোক্ষম সময়

উপদেষ্টা মনে করেন, এই অন্তর্বর্তী সময়টা নীতিমালা তৈরির জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। “আমাদের সময় সীমিত। যারা পরিবেশ আন্দোলনে আছেন, দ্রুত কাজ শুরু করুন,” বলেন তিনি।

তিনি আরও বলেন, “এই সরকারের দরজা সবসময় খোলা। পরিবেশ ধ্বংস হলে মানুষের সুরক্ষা হয় না। আমরা একটি দূষিত বাস্তবতার ভেতর আছি। রাজনৈতিক দলগুলো সহযোগিতা না করলে পরিস্থিতি মোকাবিলা করা সম্ভব নয়।”

পরিবেশ, পানি ও শিল্পখাত নিয়ে উদ্বেগ

শারমীন এস মুরশিদ বলেন, “দেশের অনেক এলাকায় এখনও পানিতে আর্সেনিক রয়েছে। আমরা এখনও ভূপৃষ্ঠের পানি খাওয়ার উপযোগী করতে পারিনি। অথচ এটি আমাদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ।”

তিনি দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, “যে পানি আমরা পান করব, সেটি একটি ইন্ডাস্ট্রি এসে নষ্ট করে দিচ্ছে, আর স্থানীয়রা কিছু বলতেও পারছে না।”

তিনি আরও বলেন, “আমরা এখনও গার্মেন্টস সেক্টরকে নীতিমালাভিত্তিক করতে পারিনি। যারা শ্রমিককে অতিরিক্ত ৫ টাকা দিতে চায় না, তারা কীভাবে পরিবেশ রক্ষা করবে?”

দেশের সর্বত্র একটি ধ্বংসাত্মক অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক সংস্কৃতি বিরাজ করছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি। “এই নীতির চর্চা আমরা ৫৪ বছর ধরে করে যাচ্ছি,”—উপসংহারে বলেন শারমীন এস মুরশিদ।