সিনিয়র সাংবাদিক [মাসুদ কামাল (Masud Kamal)] সম্প্রতি এক টেলিভিশন টকশোতে [জাতীয় নাগরিক পার্টি (NCP)]-র [আওয়ামী লীগ (Awami League)] নিষিদ্ধ করার দাবিকে একটি রাজনৈতিক দলের কৌশলগত অবস্থান হিসেবে বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেন, ‘‘প্রত্যেকটা পার্টির আলাদা পলিটিক্স আছে, এনসিপির পলিটিক্স হলো আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করা।’’
রাজনৈতিক দাবির স্বাভাবিকতা ব্যাখ্যা
মাসুদ কামাল বলেন, ‘‘বিএনপি হোক বা এনসিপি—উভয়ই রাজনৈতিক দল। একটি রাজনৈতিক দলের পক্ষ থেকে নিষিদ্ধকরণের মতো দাবি ওঠা অসম্ভব নয়। এটা তাদের রাজনৈতিক দর্শনের অংশ। তবে এ ধরনের নিষিদ্ধ করার এখতিয়ার তাদের হাতে নেই, সে ক্ষমতা সরকারের কাছেই।’’
দল নিষিদ্ধকরণের পদ্ধতি
তিনি দল নিষিদ্ধকরণের তিনটি পথ উল্লেখ করেন:
1. সরকারি নির্বাহী আদেশে নিষিদ্ধকরণ
2. বিচার বিভাগের আদেশে নিষিদ্ধকরণ
3. জনগণের প্রত্যাখ্যানের মাধ্যমে অপ্রাসঙ্গিক হয়ে যাওয়া
তিনি বলেন, ‘‘বাংলাদেশে এমন বহু দল আছে যারা জনগণের সমর্থন না পেয়ে এক সময় হারিয়ে গেছে। তাদের নিষিদ্ধ করার প্রয়োজন হয়নি।’’
রাজনৈতিক দাবির পেছনের উদ্দেশ্য
তিনি আরও বলেন, ‘‘রাজনৈতিক দলের দাবির পেছনে কেবল আদর্শ নয়, কৌশলগত বাস্তবতাও থাকে। অনেক সময় জনপ্রিয় ইস্যু নিয়ে বারবার কথা বলে দলের সমর্থন বাড়ানোর চেষ্টা করা হয়। এটি কৌশলের অংশ।’’
অতীতে আওয়ামী লীগের অবস্থান
আওয়ামী লীগের অতীত আচরণ প্রসঙ্গে মাসুদ কামাল বলেন, ‘‘আওয়ামী লীগ যখন সরকারে ছিল, তারা জামায়াতকে নিষিদ্ধ করার দাবি বারবার তুলেছে, কিন্তু অনেক দেরিতে গিয়ে সেই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এটি ছিল একটি জনপ্রিয় রাজনৈতিক ইস্যু। এনসিপিও একই কৌশল গ্রহণ করতে পারে।’’
তিনি বলেন, ‘‘আওয়ামী লীগ জামায়াতের বিষয়ে একই কৌশল প্রয়োগ করেছে—দাবি তোলে, কিন্তু নিষিদ্ধ করে না; শেষ মুহূর্তে গিয়ে সিদ্ধান্ত নেয়। এনসিপিও এমন রাজনৈতিক কৌশল হিসেবে একই পন্থা অনুসরণ করছে বলে আমি মনে করি।’’
উপসংহার
মাসুদ কামালের বিশ্লেষণে স্পষ্ট হয়, NCP-র ‘আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ’ দাবিটি রাজনৈতিক স্ট্র্যাটেজির অংশ, এবং এটি রাজনৈতিক পরিসরে যুক্তিসঙ্গত দাবির মধ্যেই পড়ে। এমন দাবির মাধ্যমে তারা জনগণের সমর্থন আদায়ের চেষ্টা করছে।