গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে হলে আগে একটি গণতান্ত্রিক সমাজ গড়ে তুলতে হবে—এমন মন্তব্য করেছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর (Mirza Fakhrul Islam Alamgir)।
বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবসে আলোচনায় বিএনপি মহাসচিব
রোববার বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবস-২০২৫ উপলক্ষে জাতীয় প্রেস ক্লাব (National Press Club)-এর আবদুস সালাম হল (Abdus Salam Hall)-এ সম্পাদক পরিষদ (Editors’ Council) আয়োজিত আলোচনা সভায় অংশ নিয়ে তিনি এ মন্তব্য করেন।
“সংবাদমাধ্যম ছাড়া গণতন্ত্র চর্চা অসম্ভব”
বিএনপি (BNP) মহাসচিব বলেন, “সংবাদপত্রের স্বাধীনতার পক্ষে আমরা বরাবরই ছিলাম, ভবিষ্যতেও থাকব। অন্যের মত চাপিয়ে দেওয়াকে আমরা কখনোই সমর্থন করি না। মত প্রকাশের স্বাধীনতা রক্ষায় আমরা লড়াই চালিয়ে যাব।”
তিনি আরও বলেন, “বাংলাদেশে সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতার ইতিহাস নতুন নয়। ষাটের দশক থেকেই আমরা পাকিস্তান শাসকদের বিরুদ্ধে কথা বলেছি, আন্দোলন করেছি। তখনকার সংবাদমাধ্যমের দেশপ্রেম ও দায়িত্ববোধ অনেক বেশি ছিল।”
আন্তর্জাতিক মানদণ্ডে স্বাধীনতা বেড়েছে, তবে সমস্যা রয়ে গেছে
মির্জা ফখরুল জানান, “বর্তমানে সংবাদপত্রের স্বাধীনতা আন্তর্জাতিক মানদণ্ডে ১৬ ভাগ বেড়েছে। তবে যখন দেখি সংবাদমাধ্যম একে অপরকে আক্রমণ করছে এবং রাজনৈতিক গোষ্ঠী তাতে যুক্ত হচ্ছে, তখন প্রশ্ন জাগে, এভাবে কী গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা সম্ভব?”
তিনি বলেন, “আমরা এখন একটি ট্রানজিশন পিরিয়ডে আছি। সত্যিকারের গণতন্ত্র চাইলে চিন্তাভাবনাও গণতান্ত্রিক হতে হবে।”
‘গণতন্ত্র নেই বলেই ১৫ বছর ধরে লড়াই’
সাবেক এই মন্ত্রী বলেন, “১৫ বছর ধরে আমরা গণতন্ত্রের জন্য লড়াই করছি। গত ২৪ জুলাইয়ের ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মাধ্যমে একটি ফ্যাসিস্ট সরকার সরিয়ে গণতান্ত্রিক যাত্রার সূচনা হয়েছে।”
“সংস্কারের বিরোধিতা নয়, আমরা নির্বাচনের পক্ষে”
বিএনপি নেতা অভিযোগ করেন, “আমাদের বিরুদ্ধে প্রচারণা চালানো হচ্ছে যে আমরা নাকি সংস্কারের বিরুদ্ধে। বাস্তবতা হলো—সংস্কার তো আমরাই শুরু করেছি। একদলীয় শাসন থেকে বহুদলীয় ব্যবস্থায় এনেছি, প্রেসিডেন্ট শাসন থেকে সংসদীয় শাসনে গেছি, এমনকি কেয়ারটেকার সরকারও আমরাই সংবিধানে এনেছি। তারপরও আমাদের প্রশ্নবিদ্ধ করা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।”
আলোচনায় অংশ নেন বিশিষ্ট সম্পাদক ও রাজনৈতিক নেতারা
সভায় সভাপতিত্ব করেন ডেইলি স্টার (The Daily Star) সম্পাদক ও সম্পাদক পরিষদের সভাপতি মাহফুজ আনাম (Mahfuz Anam) এবং সঞ্চালনা করেন সম্পাদক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ও বণিক বার্তা (Bonik Barta) সম্পাদক দেওয়ান হানিফ মাহমুদ (Dewan Hanif Mahmud)।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন সম্পাদক পরিষদের সহ-সভাপতি ও নিউ এজ (New Age) সম্পাদক নুরুল কবির (Nurul Kabir), সম্পাদক পরিষদের কোষাধ্যক্ষ ও মানবজমিন (Manab Zamin) সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী (Matiur Rahman Chowdhury), প্রথম আলো (Prothom Alo) সম্পাদক মতিউর রহমান (Matiur Rahman), নাগরিক ঐক্য (Nagorik Oikya) সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না (Mahmudur Rahman Manna), গণসংহতি আন্দোলন (Ganosamhati Andolon) প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি (Jonaed Saki), জাতীয় নাগরিক পার্টি (National Citizen Party) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম (Nahid Islam), সমকাল (Samakal) সম্পাদক শাহেদ মুহাম্মদ আলী (Shahed Muhammad Ali), এবং কালের কণ্ঠ (Kaler Kantho) সম্পাদক ও জাতীয় প্রেস ক্লাব সভাপতি কবি হাসান হাফিজ (Kobi Hasan Hafiz)।