Monday , December 4 2023
Home / National / হটাৎ দেশে বেড়ে গেছে নাগরিকত্ব ছাড়ার হিড়িক, ১১ মাসে নাগরিকত্ব ছেড়ে দিয়েছেন রেকর্ড সংখক বাংলাদেশী

হটাৎ দেশে বেড়ে গেছে নাগরিকত্ব ছাড়ার হিড়িক, ১১ মাসে নাগরিকত্ব ছেড়ে দিয়েছেন রেকর্ড সংখক বাংলাদেশী

একটি দেশের মানুষের কাছে তার সব থেকে বড় পরিচয় তাদের দেশের নাগরিকত্ব। আর এই নাগরিকত্বই প্রকাশ করে তার জাতীয় পরিচয়। তবে সম্প্রতি বাংলাদেশে ঘটে গেছে বড় একটি ঘটনা আর সেটি হলো দেশে বেড়ে গেছে নাগরিকত্ব ছেড়ে দেয়ার হিড়িক। আর এ নিয়ে এখন চলছে নানা ধরনের আলোচনা।

উদাহরণ স্বরূপ একটি ঘটনা বলা যেতে পারে। কামরুন্নাহারের সুরভী। জন্ম ২৮ জুলাই, ১৯৯৫। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তার নাগরিকত্ব পরিত্যাগের আবেদন মঞ্জুর করেছে। একই সঙ্গে লতা রায় নামে আরেক ব্যক্তির নাগরিকত্ব ত্যাগের আবেদন করে মন্ত্রণালয়। তিনি ১০ মে, ১৯৮৮ সালে জন্মগ্রহণ করেন। তারা দুজনেই নেপালের নাগরিকত্ব নিয়েছেন। ২৭ নভেম্বর, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নিরাপত্তা সেবা বিভাগের উপসচিব আলিমুন রাজীব স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে নেপালে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতকে বলা হয় যে, সরকার আবেদনকারীদের বাংলাদেশি নাগরিকত্ব পরিত্যাগের আবেদন অনুমোদন করেছে। তাদের নাগরিকত্ব ত্যাগ করার অনুমোদনপত্র হস্তান্তরের আগে আসল পাসপোর্ট নিতে এবং নিরাপত্তা পরিষেবা বিভাগে পাঠাতে অনুরোধ করা হচ্ছে।

এদিকে, হংকংয়ে বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেলকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ২৪ নভেম্বরের একটি চিঠিতে বলা হয়েছে, সরকার বাংলাদেশি পাসপোর্টধারী সালমিনা আজমির নাগরিকত্ব পরিত্যাগের আবেদন অনুমোদন করেছে। তিনি হংকংয়ের নাগরিকত্ব নিয়েছেন। একই তারিখে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নিরাপত্তা সেবা বিভাগ থেকে বাংলাদেশের হাইকমিশনারকে আরও তিন ব্যক্তির নাগরিকত্ব পরিত্যাগ এবং সিঙ্গাপুরের নাগরিকত্ব গ্রহণের বিষয়টি জানিয়ে চিঠি পাঠানো হয়।

গত ১৬ নভেম্বর লন্ডনে বাংলাদেশের হাইকমিশনারকে মাসুদুর রহমান নামের এক ব্যক্তির নাগরিকত্ব পরিত্যাগ এবং ব্রিটিশ নাগরিকত্ব গ্রহণের বিষয়ে একটি চিঠি পাঠানো হয়। গত ৩ নভেম্বর আরমান খান নামের এক ব্যক্তি তার বাংলাদেশি নাগরিকত্ব পরিত্যাগ করে বতসোয়ানার নাগরিকত্ব গ্রহণ করেন বলে দক্ষিণ আফ্রিকার প্রিটোরিয়ায় বাংলাদেশের হাইকমিশনারকে চিঠি পাঠানো হয়। গত ২ নভেম্বর ওয়ারশ ও পোল্যান্ডের হাইকমিশনারকে চিঠি দিয়ে বলা হয়, মোহাম্মদ আতাউর রহমান ও ফরিদ আখতার নামে দুই ব্যক্তি ইউক্রেন ও লিথুয়ানিয়ার নাগরিকত্ব নিয়ে বাংলাদেশের নাগরিকত্ব ত্যাগ করেছেন।

সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, ১ জানুয়ারি (২০২২) থেকে ২৭ নভেম্বর পর্যন্ত ১১ মাসে ৪০১ জন নাগরিকত্ব ত্যাগ করেছেন। আগের বছর ২০২১ সালে ১৬৪ জন বাংলাদেশের নাগরিকত্ব ত্যাগ করেন। ২০২০ সালে ২৯৭ জন চলে গেছে। জার্মানি, হংকং, সিঙ্গাপুর, অস্ট্রেলিয়া, অস্ট্রিয়া, কোরিয়া, ভারতের নাগরিকত্ব সবচেয়ে বেশি। যুদ্ধবিধ্বস্ত ইউক্রেন এবং শ্রীলঙ্কার মতো দেশ, যারা অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক অস্থিরতায় ভুগছে, তারাও নাগরিকত্বের তালিকায় রয়েছে।

মাতৃভূমির নাগরিকত্ব ছেড়ে অনেকেই বিভিন্ন দেশের নাগরিকত্ব গ্রহণ করছেন। এই সংখ্যা প্রতিনিয়ত বাড়ছে। নিজের দেশের নাগরিকত্ব বজায় রেখে অনেকেই অন্য দেশের নাগরিকত্ব গ্রহণ করছেন। যা দ্বৈত নাগরিকত্ব হিসেবে বিবেচিত হয়। সংশ্লিষ্টরা জানান, নানা কারণে নিজ দেশের নাগরিকত্ব ত্যাগ করে অন্য দেশের নাগরিকত্ব গ্রহণ করেছেন। তবে এ বিষয়ে বিস্তারিত কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি তারা।

কীভাবে নাগরিকত্ব ছাড়া যায়

নাগরিকত্ব ত্যাগের জন্য যে দেশের নাগরিকত্ব নেওয়া হয়েছে সেখান থেকে সংশ্লিষ্ট দেশের বাংলাদেশ দূতাবাস বা হাইকমিশনে আবেদন করা যাবে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে, সরকার নাগরিকত্ব ত্যাগের অনুমোদন দেয়, তারা বলে।

দ্বৈত নাগরিকত্বের ক্ষেত্রে, কিছু নিয়ম মেনে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নিরাপত্তা বিভাগের নিরাপত্তা ও অভিবাসন বিভাগে আবেদন করতে হবে। তারপরে, গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিবেদনের ভিত্তিতে নাগরিকত্ব আইন, বিধি এবং সার্কুলার অনুসারে যাচাইয়ের পরে দ্বৈত নাগরিকত্ব সনদের ইস্যু বা আবেদন বাতিল করে মন্ত্রণালয়।

বাংলাদেশের দ্বৈত নাগরিকত্বের বিধান অনুযায়ী সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানে কর্মরত ব্যক্তি এবং মিয়ানমারসহ কয়েকটি দেশের নাগরিকরা দ্বৈত নাগরিকত্ব পাবেন না। এ ছাড়া সার্কভুক্ত দেশগুলোর নাগরিকদের দ্বৈত নাগরিকত্ব না দেওয়ার প্রস্তাব রয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। তবে নাগরিকত্ব ত্যাগের ক্ষেত্রে এই নিয়ম প্রযোজ্য নয়।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, নাগরিকত্ব ত্যাগ করতে হলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে অনলাইনে বা সরাসরি বাংলাদেশের বিভিন্ন দূতাবাস, হাইকমিশন থেকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে আবেদন করতে হবে। সঙ্গে দূতাবাস বা হাইকমিশনের সুপারিশপত্র এবং পাঁচ হাজার টাকার ট্রেজারি চালানের কপি ও পাসপোর্টের কপি জমা দিতে হবে। এর পরে, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক নাগরিকত্ব আইন, বিধি এবং সার্কুলার অনুসারে নাগরিকত্ব ত্যাগের শংসাপত্র জারি করে।

কেন নাগরিকত্ব ছেড়ে দেওয়া হয়

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নিরাপত্তা সেবা বিভাগ, নিরাপত্তা ও আউটরিচ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মোঃ খায়রুল আলম শেখ বলেন, বিভিন্ন কারণে মানুষ নাগরিকত্ব ত্যাগ করে। যেকোনো দেশের নাগরিকত্ব পেতে হলে নিজ দেশের নাগরিকত্ব ত্যাগ করতে হবে। এটা সংশ্লিষ্ট দেশের উপর নির্ভর করে। এ কারণে অনেকেই তাদের নাগরিকত্ব ত্যাগ করে। সে দেশের নাগরিকত্ব পাওয়ার পর অনেকেই নিজ দেশের নাগরিকত্ব ফিরে পেতে আবেদন করেন। এরপর তাকে আবারও বাংলাদেশের আইন অনুযায়ী নাগরিকত্ব দেওয়া হয়। এরপর তিনি দ্বৈত নাগরিক হন।

প্রসঙ্গত,এ দিকে নাগরিকত্ব ছেড়ে দেয়ার বিষয়ে বেশ আলোচনার সৃষ্টি হয়েছে সরকার মহলে। বিশেষ করে কেন এ বছরেই বেড়ে গেছে এই ঘটনা তা খতিয়ে দেখছেন তারা। তবে ইটা তেমন কোনো বড় বিষয় নয় বলেও জানিয়েছেন সরকার পক্ষের লোকেরা।

About Rasel Khalifa

Check Also

Turinabol è un farmaco anabolizzante molto popolare tra gli atleti e i culturisti. Si tratta di un

Turinabol è un farmaco anabolizzante molto popolare tra gli atleti e i culturisti. Si tratta …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *