ফেনী (Feni) সদর উপজেলার পাঁচগাছিয়া ইউনিয়ন (Panchgachia Union) এলাকায় চুরি সন্দেহে দুই কিশোরের মায়েদের প্রকাশ্যে হেনস্তা করে ‘নাকে খত’ দেওয়ানোর ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও বিতর্ক তৈরি হয়েছে। ঘটনায় অভিযুক্ত ইউনিয়ন বিএনপি (BNP) সভাপতি ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেন দেলু (Delowar Hossain Delu)–এর দলীয় সকল পদ স্থগিত করা হয়েছে।
সালিশে নৃশংসতা
ঘটনাটি ঘটে গত ১ মে রাতে, উপজেলার খালুর দোকান এলাকায়। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, দুই কিশোরের বিরুদ্ধে স্থানীয় জাহাঙ্গীরের বাড়ি থেকে কবুতর ও মুরগি চুরির অভিযোগে সালিশ ডাকা হয়। বিচারকের ভূমিকায় ছিলেন দেলু। অভিযুক্ত কিশোররা শাস্তির ভয়ে পালিয়ে গেলে, দেলু ক্ষিপ্ত হয়ে তাদের মায়েদের ডেকে এনে শত শত মানুষের সামনে লাঠি হাতে হুমকি দিয়ে ‘নাকে খত’ দিতে বাধ্য করেন।
ভাইরাল ভিডিও ও জনমত
সালিশের ১ মিনিট ৫৪ সেকেন্ডের ভিডিওতে দেখা যায়, রাতের অন্ধকারে বহু মানুষের সামনে চেয়ারে বসে সালিশ করছেন দেলু। মাটিতে দাগ দিয়ে দুই নারীকে নাকে খত দিতে নির্দেশ দিচ্ছেন তিনি। বোরকা পরা দুই নারী ভয়ে মাটিতে লুটে পড়ে নাকে খত দেন।
মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ
ঘটনাটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়ার পর ব্যাপক সমালোচনা সৃষ্টি হয়। রহিমা খাতুন হেলপী (Rahima Khatun Helpi), ফেনী জজ কোর্টের এজিপি, বলেন, “একজনের অপরাধে আরেকজনকে শাস্তি দেওয়া মানবাধিকারের লঙ্ঘন এবং আইনত অপরাধ।”
প্রশাসনের অবস্থান
ফেনী জেলার পুলিশ সুপার হাবিবুর রহমান (Habibur Rahman) জানান, ভিডিওটি তারা দেখেছেন এবং তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
দেলুর দলীয় পদ স্থগিত
ঘটনার তীব্র প্রতিক্রিয়ায় শনিবার (৪ মে) বিকেলে ফজলুর রহমান বকুল (Fazlur Rahman Bakul) এবং আমান উদ্দিন কায়সার (Aman Uddin Kaiser)–এর সই করা এক বিজ্ঞপ্তিতে দেলুর সব পদ স্থগিতের ঘোষণা দেওয়া হয়। বিজ্ঞপ্তিতে মাহবুবুর রহমান শামীম (Mahbubur Rahman Shamim) এবং জেলা বিএনপির নেতাদের অবহিত করা হয়েছে।
দেলুর ব্যাখ্যা
ঘটনার বিষয়ে জানতে চাইলে দেলোয়ার হোসেন দেলু বলেন, “কিশোরদের অপরাধে তাদের মায়েদের শাস্তি দেওয়া ঠিক হয়নি, এটা মানবাধিকার লঙ্ঘন। তবে পরিস্থিতির চাপে এমনটি করতে হয়েছে।”