তিস্তা নদীর পানি সংকট নিয়ে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) (Bangladesh Nationalist Party – BNP)র স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস (Mirza Abbas) বলেছেন, “ভারত (India) পানিকে মারণাস্ত্র ও যুদ্ধাস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করেছে।”
রোববার (৪ মে) বিকেলে রংপুর (Rangpur) শহরের শাপলা চত্বর (Shapla Chattar) থেকে তিস্তার পানির ন্যায্য হিস্যা আদায় ও মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের দাবিতে অনুষ্ঠিত গণপদযাত্রা পূর্ববর্তী গণসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।
“পানি কখনো যুদ্ধাস্ত্র হতে পারে না”
মির্জা আব্বাস বলেন, “পানি কখনো মারণাস্ত্র হতে পারে না, কখনো যুদ্ধাস্ত্র হতে পারে না। কিন্তু ভারত দেখিয়ে দিয়েছে পানিকেও কীভাবে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করা যায়। এটা কতটা অমানবিক কাজ, তা কল্পনার বাইরে।”
তিনি আরও বলেন, “শুধু তিস্তা নয়, সারাদেশের ৫৪টি অভিন্ন নদীর পানির প্রবাহ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। আমি বিশ্বাস করি, ইনশাআল্লাহ তিস্তার ন্যায্য হিস্যা আমরা আদায় করেই ছাড়বো।”
“আমরা বকশিশ চাই না, পাওনা হিস্যা চাই”
বক্তব্যে তিনি আরও বলেন, “আমরা বকশিশ চাই না, ভিক্ষা চাই না। আমরা আমাদের হিসাবের পাওনা চাই। আজ না হোক কাল, কাল না হলে পরশু—এই আন্দোলন আর থামবে না। আমরা সেই সরকারের অপেক্ষায় আছি, যারা দেশের মানুষের ভাষা বোঝে এবং দাবি আদায়ে সক্ষম।”
গণপদযাত্রায় বিভিন্ন সংগঠনের অংশগ্রহণ
তিস্তা নদী রক্ষা আন্দোলন (Teesta River Protection Movement) ব্যানারে আয়োজিত এ কর্মসূচিতে সভাপতিত্ব করেন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক (রংপুর বিভাগ) ও আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী অধ্যক্ষ আসাদুল হাবিব দুলু (Asadul Habib Dulu)। বিশেষ অতিথি ছিলেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু (Shamsuzzaman Dudu)।
অনুষ্ঠানে রংপুর মহানগর (Rangpur Metropolitan)সহ বিএনপির বিভিন্ন জেলা ইউনিটের নেতারাও বক্তব্য রাখেন।
গণপদযাত্রা ও পূর্বের কর্মসূচি
সমাবেশ শেষে বেলা সাড়ে ৫টার দিকে শাপলা চত্বর থেকে শুরু হয় গণপদযাত্রা, যা প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে ডিসির মোড়ে গিয়ে শেষ হয়।
উত্তরবঙ্গবাসীর প্রাণের দাবি হিসেবে পানি সংকট, নদীভাঙন ও জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব মোকাবিলায় নানা শ্রেণিপেশার মানুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশ নেন। উপস্থিত ছিলেন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি, কৃষক, শ্রমজীবী মানুষ, পরিবেশবাদী সংগঠন এবং সাধারণ জনগণ।
এর আগে, গত ১৭ ও ১৮ ফেব্রুয়ারি রংপুর বিভাগের (Rangpur Division) পাঁচ জেলার তিস্তা নদীর ১১টি পয়েন্টে টানা ৪৮ ঘণ্টার কর্মসূচি পালন করে তিস্তা নদী রক্ষা আন্দোলন।