এবার দিনের ভোট রাতে হওয়ার সুযোগ নেই: প্রধান নির্বাচন কমিশনার

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে নিরপেক্ষ, অবাধ এবং সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজনে নির্বাচন কমিশনের অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার এ এম এম নাসির উদ্দিন (Chief Election Commissioner A M M Nasir Uddin)। তিনি বলেছেন, “এবার দিনের ভোট রাতে হওয়ার কোনো সুযোগ নেই।”

সোমবার (৫ মে) সকাল ১০টায় ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশন (Mymensingh City Corporation)-এর শহীদ শাহাবুদ্দিন মিলনায়তনে ভোটার তালিকা হালনাগাদ ও আসন্ন জাতীয় নির্বাচন উপলক্ষে এক মতবিনিময় সভায় তিনি এ কথা বলেন।

তিনটি নৈতিক মানদণ্ড অনুসরণে নির্দেশনা

সিইসি নাসির উদ্দিন বলেন, “নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট অফিসারদের বলেছি, সিদ্ধান্ত নিতে হবে তিনটি মানদণ্ড অনুসরণ করে: প্রথমত কাজটি আইনসম্মত কি না, দ্বিতীয়ত নিজ বিবেক সেটি সমর্থন করছে কি না, এবং তৃতীয়ত ১৮ কোটি মানুষের সামনে নিজেদের দায়বদ্ধতা স্বীকার করতে হবে।”

তিনি আরও বলেন, “আমরা যারা নির্বাচনের সঙ্গে সম্পৃক্ত, যদি সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন না করি তাহলে জাতির কাছে জবাবদিহি করতে হবে। তাই এই তিনটি মানদণ্ড মেনে আমরা কাজ করছি।”

নিরপেক্ষ নির্বাচনের প্রতিশ্রুতি

প্রধান নির্বাচন কমিশনার জানান, নির্বাচন কমিশন নিরপেক্ষতা রক্ষা করতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। তিনি বলেন, “আমরা শপথ নিয়েছি, সেটি সমুন্নত রাখবো। অতীতে যা হয়েছে, ভবিষ্যতে যেন তা না হয়—এটা নিশ্চিত করতেই আমরা কাজ করছি।”

সব দলের সহযোগিতার আহ্বান

সিইসি জানান, বর্তমানে সব রাজনৈতিক দলই নিরপেক্ষ নির্বাচনের কথা বলছে, যা একটি ইতিবাচক বার্তা। “তারা বলছে ২০২৪-এর আন্দোলন করে লাভ নেই যদি একটি নিরপেক্ষ নির্বাচন না হয়। এটি আমাদের জন্য আশার কথা।”

উৎসবমুখর নির্বাচনের লক্ষ্য

তিনি আরও বলেন, “প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন, উৎসবমুখর পরিবেশে যেন ভোটের দিনটি পালিত হয়। আমরা সে অনুযায়ী প্রস্তুতি নিচ্ছি। যাতে সবাই নির্ভয়ে ও নির্দ্বিধায় নিজের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে পারে, সে লক্ষ্যে কাজ করছি।”

একক সিদ্ধান্ত নয়, সমন্বিত সিদ্ধান্ত

সিইসি সাফ জানিয়ে দেন, “আমি এককভাবে কোনো সিদ্ধান্ত নিইনি। আমরা পাঁচজন কমিশনার ঐক্যমতের ভিত্তিতে সব সিদ্ধান্ত নিয়েছি।”

রাজনীতির বাইরে নয় নির্বাচন কমিশন

আওয়ামী লীগ (Awami League) নির্বাচনে অংশ নেবে কি না—সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে সিইসি বলেন, “মাঠে আলোচনা চলছে। রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত ছাড়া কিছু হয় না, আর আমরা রাজনীতির বাইরে কাজ করতে পারি না।”

সভায় সভাপতিত্ব করেন আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা শাহিনুর ইসলাম প্রামানিক (Shahinur Islam Pramanik)। এতে ময়মনসিংহ অঞ্চলের অতিরিক্ত আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা, জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা, অতিরিক্ত জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তারা অংশ নেন।