মানবিক করিডর ইস্যুতে বিভ্রান্তি: গুজব, সমন্বয়হীনতা নাকি যুক্তরাষ্ট্রের চাপ?

রাখাইন রাজ্যে মানবিক করিডর খোলার বিষয়ে বাংলাদেশ (Bangladesh) সরকারের সম্মতি আছে কি না—এই নিয়ে দেশে-বিদেশে ছড়িয়ে পড়েছে জোর আলোচনা ও বিভ্রান্তি। তবে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ড. খলিলুর রহমান (Dr. Khallilur Rahman) পরিষ্কারভাবে জানিয়েছেন, বাংলাদেশ মানবিক করিডর খোলার বিষয়ে কোনো ধরনের চুক্তি করেনি এবং যুক্তরাষ্ট্রের হয়ে কোনো প্রক্সি যুদ্ধে জড়ানোর প্রশ্নই ওঠে না।

প্রতিবেশী দেশের দিকে অভিযোগ

ড. খলিলুর রহমান জানান, “এই ধরনের গুজবের জন্য প্রতিবেশী দেশ দায়ী। বাংলাদেশ তার জাতীয় স্বার্থ অক্ষুণ্ণ রেখেই চলবে। কেউ চাইলেই আমরা প্রক্সি যুদ্ধে জড়াবো না।” তিনি বলেন, “গুজব ছড়িয়ে সরকারকে বিভ্রান্ত করার অপচেষ্টা হচ্ছে।”

সরকারের ভেতরে সমন্বয়ের অভাব

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (University of Dhaka)’র আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ড. আমেনা মহসিন (Dr. Amena Mohsin) বলেন, “সরকারের বিভিন্ন দপ্তরের মধ্যে এ ইস্যুতে স্পষ্ট সমন্বয়ের অভাব রয়েছে। কখনো পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে নীতিগতভাবে সম্মত, আবার কখনো প্রেস সেক্রেটারি বলেছে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি—এতে জনমনে বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে।”

তিনি আরও বলেন, “মানবিক করিডর ও মানবিক চ্যানেলের মধ্যে পার্থক্য পরিষ্কার না করায় বিষয়টি আরও জটিল হয়েছে। এখন প্রয়োজন একটি স্বচ্ছ ও ঐক্যবদ্ধ সরকারি অবস্থান, যাতে কোনো ধরনের গুজব বা ভুল ব্যাখ্যা ছড়াতে না পারে।”

যুক্তরাষ্ট্রের চাপ?

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও কিছু অনানুষ্ঠানিক সূত্র দাবি করছে, এই প্রস্তাবের পেছনে যুক্তরাষ্ট্র (United States)ের কূটনৈতিক চাপ থাকতে পারে। তবে এ বিষয়ে সরকারের পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত কোনো আনুষ্ঠানিক বক্তব্য বা প্রমাণ মেলেনি।

ড. আমেনা মহসিন বলেন, “রাখাইন অঞ্চলটি ভূরাজনৈতিকভাবে অতি স্পর্শকাতর। সেখানে গৃহযুদ্ধ চলছে, চীনের স্বার্থ রয়েছে, এমনকি বলা হচ্ছে জাতিসংঘও মানবিক করিডরের প্রস্তাব দিয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে রাজনৈতিক দল ও সংশ্লিষ্ট জনগণের সঙ্গে আলোচনা জরুরি।”