ফ্যাসিবাদের পক্ষে সম্মতি সৃষ্টি নয়, সংবাদমাধ্যমকে সতর্ক করলেন তথ্য উপদেষ্টা

‘ফ্যাসিবাদের পক্ষে সম্মতি উৎপাদন কইরেন না’—এই বক্তব্য দিয়ে দেশের সংবাদমাধ্যমগুলোকে সতর্ক করলেন তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ আলম (Mahfuz Alam)। আজ সোমবার চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদপ্তর (Department of Films and Publications)–এর সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত এক সেমিনারে তিনি এই মন্তব্য করেন।

সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের আয়োজনে ‘ফ্যাসিবাদী শাসনামলে সাংবাদিক হত্যা-নিপীড়ন’ শীর্ষক সেমিনারে তথ্য উপদেষ্টা বলেন, কিছু পত্রিকা ইচ্ছাকৃতভাবে ‘জুলাই অভ্যুত্থান’ না লিখে ‘জুলাই আন্দোলন’ বলছে এবং ‘ক্ষমতার পটপরিবর্তনের পরবর্তী সরকার’ বলে সংজ্ঞায়িত করছে, যা শহীদদের আত্মত্যাগকে অস্বীকার করার শামিল।

তিনি বলেন, “সংবাদমাধ্যমের এই ধরনের বর্ণনা ফ্যাসিবাদী ষড়যন্ত্রকে আড়াল করে, যেন একটি চক্রান্ত হয়েছিল, যেখানে হাসিনাকে কেবল অপসারণ করা হয়েছে। আপনারা এটা করতে পারেন না। জনগণ আপনাদের দেখে নিবে, শহীদ ফ্যামিলিও দেখে নিবে।”

তিনি আরও যোগ করেন, “এই সংবাদমাধ্যমগুলো এখনো চালু আছে, অথচ তারা নিজের চোখে যা দেখেছে, সেটিও স্বীকার করে না। সাংবাদিকতার স্বাধীনতা মানে ইতিহাস বিকৃতির অধিকার নয়।”

সেমিনারে তথ্য মন্ত্রণালয় (Ministry of Information)–এর সচিব মাহবুবা ফারজানা (Mahbuba Farzana) জানান, সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে হওয়া ২৬৬টি মামলার মধ্যে ৭৪টি মামলা হয়রানিমূলক হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। এর মধ্যে ব্যক্তিগত মামলা ২৯টি, চারটি মামলা ছিল ফ্যাসিস্ট হাসিনার বিরুদ্ধে, বাকিগুলো রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে হয়েছে। তিনি বলেন, “সরকার চাইলে এসব মামলা প্রত্যাহার করা সম্ভব।”

সেমিনারে আরও বক্তব্য রাখেন গণমাধ্যম সংস্কার কমিশন (Media Reform Commission)–এর প্রধান কামাল আহমেদ (Kamal Ahmed), দৈনিক যায়যায়দিন (Jaijaidin)–এর সম্পাদক শফিক রেহমান (Shafik Rehman), দৈনিক আমার দেশ (Amar Desh)–এর সম্পাদক মাহমুদুর রহমান (Mahmudur Rahman), প্রথম আলো (Prothom Alo)–এর নির্বাহী সম্পাদক সাজ্জাদ শরিফ (Sazzad Sharif) এবং দৈনিক সংগ্রাম (Daily Sangram)–এর সাবেক সম্পাদক আবুল আসাদ (Abul Asad)।

অনুষ্ঠানে ‘ফ্যাসিবাদী শাসনে সাংবাদিক হত্যা-নিপীড়ন’ শীর্ষক একটি প্রকাশনার মোড়ক উন্মোচন করা হয়। এতে সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের তথ্যানুযায়ী, গত ১৫ বছরে ৬১ জন সাংবাদিক হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন এবং ৩ হাজার ৫৮৮ জন নির্যাতনের শিকার হয়েছেন।