২০১৩ সালের ৫ মে ঢাকার শাপলা চত্বরে (Shapla Chattar) অনুষ্ঠিত হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ (Hefazat-e-Islam Bangladesh)–এর মহাসমাবেশে নিহতদের মধ্যে ৯৩ জনের নাম ও পরিচয় প্রকাশ করেছে সংগঠনটি। জনসংযোগ বিভাগের দায়িত্বশীল মুফতি কেফায়েতুল্লাহ আজহারী জানান, এটি একটি প্রাথমিক খসড়া তালিকা, যাচাই-বাছাই শেষে এই সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।
নিহতদের পরিচয় প্রকাশ
মুফতি কেফায়েতুল্লাহ আজহারী (Kefayetullah Azhari) জানিয়েছেন, শহিদদের নাম, ঠিকানা এবং পরিবারের সদস্যদের বিস্তারিত তথ্য প্রাথমিকভাবে তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। তিনি বলেন, “এটি একটি খসড়া তালিকা, আমরা এখনো যাচাই-বাছাই করছি। চূড়ান্ত করতে কিছুটা সময় লাগবে।”
তালিকায় দেখা গেছে, নিহতদের অধিকাংশই যুবক ছিলেন। হেফাজত দাবি করেছে, ২০১৩ সালের সেই রাতে অসংখ্য মানুষ মারা যান। তবে এতদিনেও তাদের একটি নির্ভরযোগ্য তালিকা প্রকাশ না করায় সংগঠনের ভেতরেও ক্ষোভ বিরাজ করছিল।
সরকারের দাবি ও মানবাধিকার সংস্থার প্রতিবেদন
ঘটনার পরপরই মানবাধিকার সংস্থা অধিকার (Odhikar) ৬১ জন নিহতের তথ্য দেয়। তবে তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার (Awami League) বারবার দাবি করেছে, “শাপলা চত্বরে কেউ মারা যায়নি।” সরকারের এই দাবি ব্যাপকভাবে প্রশ্নবিদ্ধ হয় এবং বহু মানুষ তা বিশ্বাস করেনি।
প্রেক্ষাপট ও সমাবেশ
প্রসঙ্গত, ব্লগারদের বিরুদ্ধে ইসলাম ধর্ম অবমাননার অভিযোগ এবং নারীনীতির বিরোধিতা করে হেফাজতে ইসলাম ১৩ দফা দাবি উত্থাপন করে। সেই দাবিতে ৫ মে ২০১৩ তারিখে রাজধানীর শাপলা চত্বরে অবস্থান কর্মসূচিতে অংশ নেয় হাজার হাজার কওমি আলেম-ওলামা, মাদরাসা শিক্ষার্থী ও সাধারণ মুসল্লিরা।
রাত গভীর হলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী অভিযান চালিয়ে হেফাজতের কর্মসূচি ছত্রভঙ্গ করে দেয়। অভিযানে গুলি, টিয়ারশেল, সাউন্ড গ্রেনেড ইত্যাদি ব্যবহার করা হয়। হেফাজতের দাবি অনুযায়ী, সেদিন বহু মানুষ নিহত হন, যার মধ্যে এবার ৯৩ জনের নাম প্রকাশিত হয়েছে।