শেখ হাসিনার নির্দেশেই ২০১৮ সালে আমার ওপর হামলা হয়েছিল: মাহমুদুর রহমান

দৈনিক আমার দেশ (Daily Amar Desh) সম্পাদক মাহমুদুর রহমান (Mahmudur Rahman) অভিযোগ করেছেন, ২০১৮ সালে কুষ্টিয়া (Kushtia) আদালত চত্বরে তার ওপর সংঘটিত হামলার পেছনে ছিলেন শেখ হাসিনা (Sheikh Hasina)। তিনি বলেন, সেদিনের আক্রমণ পরিকল্পিতভাবে পরিচালিত হয় এবং তাৎক্ষণিকভাবে সামাজিক মাধ্যমে সরাসরি সম্প্রচারিত হওয়ায় আজও তার প্রমাণ রয়েছে।

সেমিনারে অভিযোগের সুর

সোমবার চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদপ্তর (Department of Films and Publications)-এর সভাকক্ষে বাংলাদেশ সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্ট (Bangladesh Journalists Welfare Trust) আয়োজিত ‘ফ্যাসিবাদী শাসনামলে সাংবাদিক হত্যা-নিপীড়ণ’ শীর্ষক সেমিনারে তিনি এসব অভিযোগ করেন।

ফখরুল ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর ভূমিকা

মাহমুদুর রহমান বলেন, হামলার সময় মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর (Mirza Fakhrul Islam Alamgir) তৎকালীন বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে একটি বৈঠকে সভাপতিত্ব করছিলেন। তাকে অবহিত করা হলে তিনি তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল (Asaduzzaman Khan Kamal)-কে ফোন করেন। মাহমুদুরের ভাষায়, মন্ত্রী তখন বলেছিলেন, “এটা উপরের নির্দেশ, আমার কিছু করার নেই।” এতে তার দাবি, শেখ হাসিনাই সেই নির্দেশ দিয়েছেন।

রিমান্ডের অভিজ্ঞতা

তিনি আরও জানান, তাকে ৩৯ দিন রিমান্ডে রেখে মানসিক ও শারীরিক নির্যাতন চালানো হয়। বিশেষ এক চেয়ারে বসিয়ে মাথা ঘুরিয়ে দেওয়ার কৌশল ব্যবহার করা হয়নি কি না—তা জানতে চেয়েছিলেন স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী বলে দাবি করেন তিনি। তবে দায়িত্বপ্রাপ্ত ডিবি অফিসার তাকে জানান, ‘আমাদের নির্দেশ ছিল কিন্তু আমরা সেটা প্রয়োগ করিনি।’

গাজীপুরে হামলা ও রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়া

হাসনাত আব্দুল্লাহ (Hasnat Abdullah)-র ওপর গাজীপুরে হামলার প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, একই কায়দায় তার ওপরও হামলা হয়েছিল। সাংবাদিক নামধারী আওয়ামী লীগ নেতা ‘বিপ্লব’ তার ওপর হামলায় জড়িত ছিল বলেও অভিযোগ করেন মাহমুদুর, যদিও বিপ্লবের বিরুদ্ধে মামলা হলেও গ্রেপ্তার হয়নি বলে মন্তব্য করেন তিনি।

শাপলা চত্বরের প্রসঙ্গ ও রাজনৈতিক বার্তা

২০১৩ সালের শাপলা চত্বর (Shapla Chattar)-এর ঘটনার পর গণআন্দোলন ব্যর্থ মনে হলেও ২০২৪ সালের ৫ আগস্টের আন্দোলনকে তিনি সফল বিপ্লব হিসেবে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, “জুলাই বিপ্লব কোনোদিন ব্যর্থ হবে না। আমাদের মধ্যে ঐক্যের অভাব থাকায় ফ্যাসিস্টরা আবার সাহস পাচ্ছে।”