সাইবার সিকিউরিটি আইন–এর বিতর্কিত ৯টি ধারা বাতিল করা হয়েছে এবং এই ধারাগুলোর আওতায় দায়ের হওয়া প্রায় ৯০ শতাংশ রাজনৈতিক মামলা স্বয়ংক্রিয়ভাবে বাতিল হয়ে যাবে বলে জানিয়েছেন আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল (Asif Nazrul)।
মঙ্গলবার (৬ মে) ফরেন সার্ভিস একাডেমি (Foreign Service Academy)–তে উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠক শেষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা জানান। তিনি বলেন, আইন মন্ত্রণালয়ের ভেটিং শেষে নতুন সাইবার সুরক্ষা আইন (Cyber Security Law) চলতি সপ্তাহের মধ্যেই চূড়ান্তভাবে কার্যকর হবে।
বাতিল হচ্ছে বিতর্কিত ধারা ও মামলা
আসিফ নজরুল জানান, আগের সরকারের আমলে যে সব মামলার মাধ্যমে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা দমন করা হতো—বিশেষ করে জাতির পিতা ও জাতীয় পতাকা অবমাননার মতো অভিযোগে করা মামলাগুলো—তা মূলত এই ৯টি ধারার মাধ্যমে পরিচালিত হতো। তিনি বলেন, “বাতিল হওয়া ধারাগুলোর আওতায় ৯৫ শতাংশ মামলা হয়েছিল, যা এখন স্বয়ংক্রিয়ভাবে বাতিল হয়ে যাবে।”
নতুন সংযোজন ও পরিবর্তন
তিনি জানান, নতুন আইনে নারী ও শিশু নির্যাতন, ধর্ষণ এবং ধর্মীয় উস্কানিমূলক মামলাগুলো দ্রুত আমলে নেওয়ার জন্য নতুন ধারা যুক্ত করা হয়েছে। সেইসাথে অনলাইন জুয়াকেও নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
আইন উপদেষ্টা আরও জানান, “নতুন আইনে সর্বোচ্চ শাস্তি দুই বছর নির্ধারণ করা হয়েছে। মিথ্যা মামলা করলে এবং তা প্রমাণিত হলে মামলাকারীর বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
রাজনৈতিক ঐকমত্যের গুরুত্ব
তিনি বলেন, “যেকোনো বড় ধরনের আইনগত সংস্কার রাজনৈতিক ঐকমত্য ছাড়া হবে না।” নারী সংস্কার কমিশনের সুপারিশ নিয়ে অশালীন ও বিদ্বেষমূলক মন্তব্যকারীদের সমালোচনা করে তিনি বলেন, “ভিন্নমত অবশ্যই প্রকাশ করা যাবে, তবে তা শালীনতার মধ্যে থাকতে হবে।”
আরও দুইটি আইনের অনুমোদন
বৈঠকে আরও দুটি আইনের খসড়া অনুমোদন পেয়েছে। এগুলো হলো সীমানা পুনঃনির্ধারণ আইন এবং সিভিল প্রসিডিউর কোর্ট (সিপিসি) আইন। এই দুটি আইনের মাধ্যমে সিভিল মামলার দ্রুত নিষ্পত্তির পথ সুগম হবে বলে মনে করছেন আইন উপদেষ্টা।